কমলগঞ্জের সুনছড়া চা বাগানে প্রতিষ্টার ৮৫ বছর পরও জীর্ণ ঘরে পাঠদান

প্রকাশিত: ৩:০৯ অপরাহ্ণ , ২৮ জুন ২০২৫, শনিবার , পোষ্ট করা হয়েছে 5 months আগে
ছবি- কালের বিবর্তন

আব্দুর রাজ্জাক,কমলগঞ্জ : মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জের সুনছড়া চা-বাগান । এর একটি টিলার ওপর টিনের জীর্ণ ঘর। বাইরে হেলে পড়া বাঁশে ঝুঁলে আছে জাতীয় পতাকা। ছোট্ট কক্ষে বাঁশের বেড়া দিয়ে দুটি কক্ষ তৈরি হয়েছে। ছোট ছোট খুপরি ঘরে চলছে পাঠদান। জীর্ণ ঘরের মতো শিশুদের পোশাকও জীর্ণ। এটা হচ্ছে সুনছড়া চা-বাগানের স্কুল।

জানাযায়,বাগানটিতে প্রায় ৩ হাজার মানুষের বাস। বাগানে ১৯৮০ সালে স্কুলটি প্রতিষ্টা করা হয়। চা-শ্রমিকদের অভিযোগ,তাঁদের সন্তানেরা পড়ালেখা করে বলেই প্রতিষ্ঠার ৮৫ বছর পরও করুণ অবস্থা স্কুলের। স্কুলের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৯২ জন। শিক্ষক ৩ জন। সরকারের পক্ষ থেকে শুধু বই দেওয়া হয়। শিক্ষার্থী থাকলেও নেই পর্যাপ্ত শিক্ষক, শ্রেণিকক্ষ, আসবাব, শিক্ষা উপকরণ, বিশুদ্ধ পানি , স্যানিটেশন সুবিধা।

বাগান মালিক পক্ষ শুধু বিদ্যালয়ের নামটা বাঁচিয়ে রেখেছে।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, আমরা বারবার চা-বাগানের শিক্ষাব্যবস্থার করুন পরিণতি নিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছি, আন্দোলন করেছি। তবে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।

চা-বাগানের স্কুলের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা বলছেন, তাঁরা এ দেশের নাগরিক অথচ সকল সুবিধা থেকে বঞ্চিত। আমাদের পূর্বপুরুষেরা সব সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আমরা হয়েছি, আমাদের সন্তানেরা বঞ্চিত হচ্ছে।

সুনছড়া চা-বাগান প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মিটুন কুর্মী বলেন, স্কুলে ১৯২ জন শিক্ষার্থী আছে। শিক্ষক ৩ জন। একজন শিক্ষক প্রতিদিন ১৭৮ টাকা মজুরি নিয়ে শিক্ষকতা করতে হচ্ছে। আবার অনেক শিক্ষকের সম্মানী সারা মাসে ১ হাজার ২শ টাকা। একজন শিক্ষকের এর চেয়ে কষ্ট আর কিছু হতে পারে না।

চা-শ্রমিকদের জীবন নিয়ে গবেষণা করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক আশ্রাফুল করিম বলেন,চা-বাগানে ১৯৭৭ সালের আইন অনুযায়ী প্রতিটি বাগানে একটি স্কুল থাকার কথা। তবে বাস্তবে তা নেই। আর যে কয়টা বিদ্যালয় আছে,সেখানেও প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক নেই।

মৌলভীবাজার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সফিউল আলম বলেন,চা-বাগানের প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলো সরকারীকরণ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে।