• জাতীয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা
  • গ্যাসের উপর ভিত্তি করে প্লান্ট নির্মান হলে ও প্রত্যাশায় চির! সক্ষমতার চেয়ে ১২৯ মেগাওয়াট বিদুৎ উৎপাদন কম হচ্ছে

গ্যাসের উপর ভিত্তি করে প্লান্ট নির্মান হলে ও প্রত্যাশায় চির! সক্ষমতার চেয়ে ১২৯ মেগাওয়াট বিদুৎ উৎপাদন কম হচ্ছে

প্রকাশিত: ৯:৫০ অপরাহ্ণ , ১৪ অক্টোবর ২০২১, বৃহস্পতিবার , পোষ্ট করা হয়েছে 3 years আগে

মোঃনিয়ামুল ইসলাম আকন্ঞ্জি, সক্ষমতা ১৬শত ৯০ মেগাওয়াট। তবে উৎপাদন হচ্ছে ১৫শত ৬১ মেগাওয়াট। প্রতিদিন ১২৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হচ্ছে। তাও মাঝে মাঝে আরো কমছে। জানতে চাইলে আশুগঞ্জ পাওয়ার প্লান্টের একজন কর্মকর্তা বলেন, পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহ না পাওয়ায় এমন অবস্থা। অথচ গ্যাসের উপর নির্ভর করেই জেলার আশুগঞ্জে গ্যাস নির্ভর ৮টি পাওয়ার প্লান্ট চালু করেছে। এতে ব্যায় হয়েছে অন্তত সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকা। অনুসন্ধানে জানা যায়, আশুগঞ্জ পাওয়ার প্লান্ট গুলোতে প্রতিদিন ২৩০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোঃ লিঃ এ গ্যাস সরবরাহ করে থাকে। প্রতিদিনের চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ হচ্ছে ১২০/১৩০ মিলিয়ন ঘটফুট গ্যাস। সে হিসেবে গড়ে প্রতিদিন অন্তত ১শ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে না। এর বিপরীতে ১শ ২৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হচ্ছে। কখনো কখনো সরবরাহের পরিমাণ ১শরও নীচে নামিয়ে দেয়া হয়। তখন উৎপাদন বাড়ে কমে। বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোঃ লিঃ পর্যাপ্ত গ্যাসের সরবরাহ করতে না পারায় বিদ্যুৎ উৎপাদনও ব্যাহতের কথা স্বীকার করেন কর্মকর্তারা। পাওয়ার প্লান্টের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, আমরা গ্যাসের প্রেসার কম পাচ্ছি। সে ক্ষেত্রে যতটুকু গ্যাস প্রেসার পাই, ততটুকুই উৎপাদন করি। বিদ্যুতের চাহিদা আছে ঠিকই। কিন্তু ঘাটতি রয়েছে উৎপাদনে। পর্যাপ্ত গ্যাস না পাওয়ায় ৩টি প্লান্ট দুই বছর ধরে বন্ধ। এতে ৪শ ১৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে না। এর মধ্যে ৩ নং প্লান্টে ১৩৫ মেগাওয়াট, ৪ নং প্লান্টে ১৫০ মেগাওয়াট, ৫ নং প্লান্টে ১৩৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। সূত্রটি অবশ্য দাবী করেছে মাঝে মধ্যে রেশনিং পদ্ধতিতে ইউনিটগুলো চালু রাখা হয়। বার বার বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোঃ লিঃ কে গ্যাস সংকটের বিষয়ে অবহিত করা হলেও তারা নীরব রয়েছে। সময়ে সময়ে চিঠি প্রাপ্তির পর কিছুটা বাড়তি গ্যাস মিলে পাওয়ার প্লান্টে। কয়েকদিন যেত না যেতেই পূর্বাবস্থায় চলে আসে। সর্বশেষ ৯ সেপ্টেম্বরগ্যাস প্রবাহ বৃদ্ধির জন্য পত্র দেয়া হয়েছে। প্রতি বছর গড়ে অন্তত ৪/৫টি পত্র দেয়া হয়। পাওয়ার প্লান্টের অপারেশনাল ডিভিশন সূত্র বলছে, গ্যাস প্রবাহ কম থাকায় আমরা পূর্ণ উৎপাদনে যেতে পারছি না। তাই ৩ টি ইউনিট চালু করা যাচ্ছে না। সূত্র জানিয়েছে, এ ভাবে দীর্ঘদিন পাওয়ার প্লান্ট বন্ধ থাকলে প্লান্ট গুলোতে মরিচা ধরে। সহজে নষ্ট হওয়ার আশংকা থাকে। পূর্ণ ক্ষমতায় উৎপাদন করতে না পারাটা প্লান্টের জন্য শুভ নয়। এমনটি চলতে থাকলে প্লান্টের জন্য ক্ষতিকারক। কারণ প্লান্টগুলো যতবেশী সচল থাকে যন্ত্রাংশ তত মসৃন হয়। তাছাড়া উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রাও ব্যাহত হয়। প্লান্টের সচলতাই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক বলে ওই কর্মকর্তা মনে করেন। অন্যদিকে পাওয়ার প্লান্টের লক্ষ্যমাত্র এবং মেশিন সচল থাকার নির্দেশনাও রয়েছে জ্বালানি সেক্টর থেকে। জ্বালানি সেক্টরের একটি সূত্র জানিয়েছে, সামনের দিনগুলোতে গ্যাস সংকট বাড়বে। দিন যতই যাবে চাহিদা বাড়বে। সে সাথে উৎপাদনের ভারসাম্য রক্ষাও সম্ভব হবে না। নতুন নতুন গ্যাস ক্ষেত্র থেকে গ্যাস উৎপাদন হলেও অবস্থার তেমন উন্নতি সম্ভব নয়। চলতি অবস্থা বিবেচনা করে আশুগঞ্জ পাওয়ার প্লান্টে সোলার প্লান্ট চালু করারও পরিকল্পনা রয়েছে। ১৬০ মেগাওয়াট সোলার প্লান্ট স্থাপন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সে সাথে বিকল্প জ্বালানিও খোঁজা হচ্ছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে ঝুকে পড়ছে সংশ্লিষ্টরা। এই প্রতিবেদককে এমন তথ্যই দিয়েছে জ্বালানী সংশ্লিষ্টরা।