ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শীতকালীন আগাম সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক। জেলার বিভিন্ন উপজেলার মাঠে মাঠে এখন শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন সবজি। ভালো দাম পাওয়ার আশায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খেত পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষকরা। ফুলকপি, বাঁধাকপি, সিম, বেগুন, মূলা, টমাটো, পালংশাকসহ নানা শাক-সবজিতে ভরে গেছে কৃষকের খেত। চলতি বছরে অতি বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা পানিতে সৃষ্ট বন্যর কারণে চাষিরা যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা পুষিয়ে নিতেই এবার আগাম সবজি চাষে ঝুঁকছেন তারা। এছাড়াও যারা পিছিয়ে পড়েছেন তারা জমি প্রস্তত ও বীজ বপণে তোড়জোড় শুরু করেছেন। এদিকে বাড়ির আঙ্গিনাসহ অনাবাদি ও পতিত সব জমিতে আবাদ বাড়াতে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস থেকে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন পরামর্শ।
জেলা কৃষি বিভাগের দেওয়া তথ্যমতে, এবার জেলায় ৫ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি আবাদের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে। এরমধ্যে আবাদ হয়েছে ২ হাজার ৩১০ হেক্টর জমি। সম্প্রতি বন্যায় গ্রীষ্মকালীন মৌসুমে খরিপ-২ প্রকল্পে ৯৭৬ হেক্টর জমির সবজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এবার সেই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে জেলার প্রায় ১০ হাজার কৃষককে দেওয়া হয়েছে বীজ ও সার।
কৃষকরা বলছেন, আগাম শীতকালীন সবজি চাষে পোকা মাকড়ের আক্রমণ, বৃষ্টিপাতসহ বিভিন্ন ঝুঁকি থাকে। এছাড়াও খরচ হয় বেশি। তারপরও বাজারে ভালো দাম থাকায় লাভ হয় দ্বিগুণ। এবছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভালো দাম পাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তারা।
কথা হয় সদর উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামের উদ্যোক্তা জামাল উদ্দিনের ম্যানেজার ছদরুল ইসলামের (৫০) সঙ্গে। তিনি বলেন, উরশিউড়ায় ৬ বিঘা জমিতে আগাম জাতের মোট ১৩ হাজার টমাটোর চারা রোপণ করেছি। প্রতিটি চারা ১৫ টাকা দরে মোট এক লক্ষ ৯৫ হাজার টাকার চারা বাজার থেকে সংগ্রহ করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে দুই মাসের মধ্যে এগুলো পরিপূর্ণ গাছে রূপান্তর হবে এবং বাজারজাত করাও সম্ভব হবে। একেকটা গাছ থেকে ৩/৪ কেজি টমাটো পাওয়া যায়। প্রতি কেজি টমাটো বাজারে পাইকারি দরে বিক্রি হয় ১০০ থেকে ১১০ টাকায়। ভালো ফলন হলে এবছর ১২ থেকে ১৪ লাখ টাকার টমাটো বিক্রির আশা করছেন তিনি।
কথা হয় সুলতান গ্রামের আরেক সবজি চাষি নুরুল হকের সঙ্গে। তিনি দেড় বিঘা জমিতে আগাম সবজি চাষ করেছেন। এ বছর বৃষ্টির কারণে আগাম সবজি চাষে কিছুটা সমস্যা হয়েছে। এজন্য একটু বেশি পরিচর্যা করতে হয়েছে। অনেক খরচ পড়ছে। তবে অসময়ে বাজারে এই সবজির চাহিদা থাকে অনেক। এ কারণে এই সবজিগুলো বাজারে বেশি দামে বিক্রি করা যায়। এ জন্য আগাম শীতকালীন সবজি চাষে তিনি সবসময়ই বেশি আগ্রহী।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক সুশান্ত সাহা বলেন, বৃষ্টির পর থেকে কৃষকরা আগাম শীতকালীন বিভিন্ন ধরনের সবজির আবাদ শুরু করেছেন। যা এরইমধ্যে বাজারে উঠেছে এবং কৃষকরাও ভালো দাম পাচ্ছেন। আগাম শীতকালীন সবজি চাষে একটু ঝুঁকি বেশি থাকে। এজন্য কৃষকদের সঠিক সময়ে এবং সঠিক পদ্ধতিতে সুষম সার, জৈব সার এবং কীটনাশকের সঠিক ব্যবহারের জন্য মাঠ পর্যায়ে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এবছর শীতকালীন শাকসবজির চাষিদের ১০ হাজার বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বাড়ির আঙ্গিনাসহ অনাবাদি ও পতিত সব জমির আবাদ বাড়াতে কৃষকদের উদ্ভুদ্ধ করতে আমরা বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছি। আশা করছি এবছর আমাদের যে লক্ষমাত্রা আছে সেটা আমরা অর্জন করতে সক্ষম হবো।
মন্তব্য লিখুন
আরও খবর
বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে বুনোহাতির মৃত্যু
বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে বুনোহাতির মৃত্যু
গোমস্তাপুরে জাতীয় যুব দিবস পালিত হয়েছে
গোমস্তাপুরে জাতীয় যুব দিবস পালিত হয়েছে
নালিতাবাড়ীতে আজ সমাপ্তি হচ্ছে খ্রীষ্টধর্মের সর্ববৃহৎ তীর্থ অনুষ্ঠান
নালিতাবাড়ীতে আজ সমাপ্তি হচ্ছে খ্রীষ্টধর্মের সর্ববৃহৎ...
‘জাতীয় পার্টির রাজনীতি করার অধিকার নেই’
‘জাতীয় পার্টির রাজনীতি করার অধিকার নেই’
নারী ফুটবল দলের বেতন সমস্যা দ্রুত সময়ে সমাধান...
নারী ফুটবল দলের বেতন সমস্যা দ্রুত...
রোহিঙ্গাদের উত্তর আমেরিকায় পুনর্বাসনে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র
রোহিঙ্গাদের উত্তর আমেরিকায় পুনর্বাসনে কাজ করছে...