আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) বলেছে, বাংলাদেশে জুলাইয়ের শেষদিকে চালানো রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বিরোধী দলের সমর্থকদের ওপর পুলিশ নির্বিচারে রাবার বুলেট, টিয়ার গ্যাস, জলকামান ব্যবহার ও লাঠিপেটা করেছে। এসব কারণে বাংলাদেশে আসন্ন নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কিনা সেটা নিয়ে শঙ্কা জানিয়েছে সংস্থাটি। বুধবার সংস্থার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
এদিকে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের দক্ষিণ এশিয়ার পরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেছেন, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপর নৃশংস দমন-পীড়নকে একটি শঙ্কা হিসাবে দেখা উচিত যে বাংলাদেশে নির্বাচন গণতান্ত্রিক হবে না। বাংলাদেশ সরকার অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আন্তর্জাতিক মহলে অঙ্গীকার করছে। যদিও তারা স্বৈরাচারী আচরণ এবং নিন্দনীয় আক্রমণ চালিয়েছে যা স্পষ্টভাবে সরকারের অঙ্গীকারের বিপরীত।
বিএনপি নেতাদের বরাত দিয়ে এইচআরডব্লিউ জানায়, বিক্ষোভে দলটির অন্তত শতাধিক সমর্থক আহত হয়েছেন। পুলিশ এবং বিরোধী সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, নিরাপত্তা বাহিনী নিরস্ত্র লোকদের লাথি ও আঘাত করে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করছে। আর পুলিশের মতে, বিরোধী দলের বিক্ষোভকারীদের ছোড়া পাথরে এবং পুলিশের গাড়িতে হামলায় তাদের অন্তত ৩২ জন কর্মকর্তা আহত হয়েছেন।
এদিকে ২৯ জুলাই সমাবেশের জন্য বিএনপিকে অনুমতি দেওয়া হয়নি বলে জানায় পুলিশ। তবে এইচআরডব্লিউর মতে, আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের সমাবেশের স্বাধীনতার অধিকার এবং বিক্ষোভকে ছত্রভঙ্গ করতে মানবাধিকারের মানদণ্ডকে সম্মান করতে হবে। সংস্থাটি বলছে, বিক্ষোভ যাই হোক না কেন, আইনগতভাবে তা অনুমোদিত ছিল।
এছাড়া বিক্ষোভে পুলিশকে অহিংস উপায় মেনে চলতে পরামর্শ দিয়েছে এইচআরডব্লিউ। বলা হচ্ছে, এক্ষেত্রে কর্মকর্তারা জাতিসংঘের মৌলিক নীতিগুলো যেমন বলপ্রয়োগ ও আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করার আগে এলাকা খালি করার মতো কার্যক্রম অনুসরণ করতে পারে। জাতিসংঘের নির্দেশ মতে, বিক্ষোভে কম প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করতে হবে। আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তা বা জনসাধারণের একজনের ক্ষতির আসন্ন হুমকি মোকাবিলায় রাবার বুলেট শেষ অবলম্বন হিসাবে ব্যবহার করা উচিত। আর শুধু জনসাধারণের ব্যাপক ক্ষতি হবে এমন পরিস্থিতিতে জলকামানগুলো ব্যবহার করা উচিত।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২৯ জুলাই বিএনপির কর্মসূচির আগের কয়েক সপ্তাহে কর্তৃপক্ষ দলটির ১৫০০ জনেরও বেশি নামীয় নেতাকর্মী এবং ১৫ হাজার অজ্ঞাতনামা লোকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। বিপুলসংখ্যক অজ্ঞাত লোকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগের ব্যবহার একটি সাধারণ অবমাননাকর অভ্যাস। এ মধ্য দিয়ে মূলত বাংলাদেশে পুলিশ কাউকে ভয় দেখানো এবং গ্রেফতারের হুমকি দিয়ে থাকে।
এদিকে মীনাক্ষী গাঙ্গুলি তার বক্তব্যে আরও বলেছেন, গণহারে ও নির্বিচারে গ্রেফতার এবং সহিংস দমন-পীড়নের মাধ্যমে বিরোধীদের অক্ষম করে বাংলাদেশের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে এমন চিন্তায় কাউকে বোকা বানাতে পারবে না সরকার।
মন্তব্য লিখুন
আরও খবর
বেনাপোল-যশোর মহাসড়কে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বাস ভাড়া অর্ধেকে নির্ধারণ
বেনাপোল-যশোর মহাসড়কে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বাস ভাড়া...
জয়পুরহাটে একই স্থানে পাল্টাপাল্টি সম্মেলনের ঘোষনা:প্রশাসন কর্তৃক ১৪৪...
জয়পুরহাটে একই স্থানে পাল্টাপাল্টি সম্মেলনের ঘোষনা:প্রশাসন...
নারী ফুটবল দলের বেতন সমস্যা দ্রুত সময়ে সমাধান...
নারী ফুটবল দলের বেতন সমস্যা দ্রুত...
রোহিঙ্গাদের উত্তর আমেরিকায় পুনর্বাসনে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র
রোহিঙ্গাদের উত্তর আমেরিকায় পুনর্বাসনে কাজ করছে...
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি পূর্ণ সমর্থনের আশ্বাস অস্ট্রেলিয়ার
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি পূর্ণ সমর্থনের আশ্বাস...
এক সপ্তাহের মধ্যে খুলছে বান্দরবানের পর্যটন স্পট
এক সপ্তাহের মধ্যে খুলছে বান্দরবানের পর্যটন...