ডাব বিক্রেতা আবু কালামের আত্মকথা

প্রকাশিত: ১:৩৩ অপরাহ্ণ , ৩১ অক্টোবর ২০২৪, বৃহস্পতিবার , পোষ্ট করা হয়েছে 24 hours আগে
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কাউতলি প্রিন্স বেকারির সামনে থেকে তোলা। ছবি- জহির রায়হান।

ডাব বিক্রেতা আবু কালাম (৩৪)। ছোটবেলায় স্বপ্ন দেখতেন উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে ভালো বেতনে বড় কোন অফিসার পদে চাকরির। কিন্তু সংসারের অভাব অনটন সেই স্বপ্নকে ধূলিসাৎ করে দিয়েছে। তাই নিরুপায় হয়েই জীবিকার তাগিদে হলেন ডাব বিক্রেতা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কাউতলির প্রিন্স বেকারির সামনে এই ডাব বিক্রেতার অবস্থান। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত একটানা ডাব বিক্রি করেন তিনি।

ডাব খেতে খেতে কথার ছলে শুনছিলাম আবু কালামের মনের গহীনে লুকিয়ে রাখা চাপা কষ্টের কথাগুলো। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার মনিপুর গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলীর চার সন্তানের মধ্যে সবার ছোট তিনি। বাবা ছিলেন একজন গরীব কৃষক। জমিতে চাষবাস করে টেনেটুনে কোনরকমে সংসার চালাতেন তার বাবা মোহাম্মদ আলী। লেখাপড়া করার তীব্র ইচ্ছে থাকা স্বত্বেও সংসারের টানাপোড়েন প্রাইমারির গন্ডি পার করতে পারেননি এই ডাব বিক্রেতা। পঞ্চম শ্রেণীতে উঠার পরপরই পড়ালেখা বাদ দিয়ে বাবার সঙ্গে সংসারের হাল ধরতে হয়েছে তাকে। কৃষি থেকে শুরু করে সবধরনের কাজ করেছেন আবু কালাম। বর্তমানে তিনি চার সন্তানের জনক। এক ছেলে ও তিন মেয়ে নিয়ে আবু কালামের সংসার।

ডাব বিক্রেতা আবু কালাম এই প্রতিবেদককে বলেন, প্রায় ১০ বছর ধরে এ পেশায় আছি আমি। ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সামনে ডাব বিক্রি করতাম। পরে ২০১৮ সালে আবারও শহরের কাউতলিতে ডাব বিক্রি শুরু করি। প্রতি পিস ডাব ১০০ টাকায় কিনে ১২০/১৩০ টাকায় বিক্রি করি। প্রতিদিন গড়ে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকার মতো বিক্রি করতে পারি এবং এখানে হাজার খানেক টাকা আমার থাকে। ওই টাকা থেকে সংসারের ভরণপোষণের খরচ প্রতিমাসে প্রায় ২৫ হাজার টাকা চলে যায়। এরপরও প্রতি মাসে কিছু টাকা সঞ্চয় করতে পারি আলহামদুলিল্লাহ।

আবু কালামের মতে, রিজিক নিয়ে তিনি কখনোই চিন্তিত নন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা কপালে যেমনটা লিখে রেখেছেন তেমনটাই হবে। হাজার চেষ্টা করলেও মানুষ তা পরিবর্তন করতে পারবেনা। অতএব আল্লাহর উপর ভরসা করেই সততার সহিত ডাব বিক্রেতা আবু কালাম জীবনের বাকি দিনগুলো পার করতে চান।

মন্তব্য লিখুন

আরও খবর