
“এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।”
ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ আজ। ১৯৭১ এর আজকের এইদিনে ঢাকার রেসকোর্সের জনসমুদ্রে দাড়িয়ে জাতির পিতা সর্বাত্মক এক আন্দোলনর ডাক দেন। সেদিন মুক্তিকামী লাখো মানুষের উপস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেছিলেন, ‘রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরও দেব, এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশা আল্লাহ’।
বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্ততির ঘোষণা দিয়েছিলেন। পৃথিবীর দুটি দেশ স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করতে পেরেছিল। এর মধ্যে একটি হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অপরটি হল বাংলাদেশ।
৭ই মার্চের ভাষণের দাবি ছিলঃ
1. চলমান সামরিক আইন প্রত্যাহার।
2. সৈন্যদের ব্যারাকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
3. গণহত্যার তদন্ত ও বিচার করতে হবে।
4. নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।
ভাষণের পর বাঙ্গালীদের আন্দোলন দুর্বল করতে জয়দেবপুরের দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের বাঙ্গালী সৈন্যদের কৌশলে নিরস্ত্র করার লক্ষ্যে তাদের অস্ত্র জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু মুক্তিকামী বাঙ্গালী সৈন্য এবং স্থানীয় জনতা তাদের মতলব বুঝতে পেরে অস্ত্র জমা না দিয়ে চাঁন্দনা মোড় থেকে জয়দেবপুর পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে। ১৯৭১ সালের ১৯ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে এভাবেই সর্বপ্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলে জয়দেবপুর তথা গাজীপুরের বীর জনতা।
ভাষণের প্রতিক্রিয়ায় ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রোজ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১:৩০ টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ধানমন্ডির ৩২ নং বাসা হতে গ্রেফতার করা হয়। ঐ দিন দিনের বেলা যে কোন জরুরি ঘোষণা প্রচারের জন্য তিনি প্রকৌশলী নিয়ে ধানমন্ডির ৩২নং বাসভবনে একটি ট্রান্সমিটার স্থাপন করেন বলে আওয়ামী লীগ সূত্রে উল্লেখ আছে। বন্দী হবার পূর্বে মধ্যরাতে অর্থাৎ ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং এই ঘোষণা ওয়ারল্যাস যোগে চট্টগ্রামে প্রেরণ করেন। পরের দিন বিবিসির প্রভাতি অধিবেশনে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণাটি প্রচার করা হয়।
ওই ভাষণে তিনি বাঙ্গালী ইতিহাসের পুরো ক্যানভাসই তুলে ধরেন বঙ্গবন্ধু। তিনি বলেছিলেন, ‘প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো। তোমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে।’ প্রকৃতপক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া বঙ্গবন্ধুর ওই ভাষণই ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা। এরপরই দেশের মুক্তিকামী মানুষ ঘরে ঘরে চূড়ান্ত লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় ছিনিয়ে আনে বাঙালি জাতি। বিশ্ব মানচিত্রে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের নব অভ্যুদয় ঘটে।
১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঘোষণাটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ঘোষণা হিসেবে ধরে নিয়ে ১৯৮০ সালে ২৬ মার্চকে স্বাধীনতা দিবস বা জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
১৭ মার্চ মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে চলমান বছরব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে এবারের ৭ মার্চ পালন হবে একটু ভিন্ন আঙ্গিকে, উৎসবমূখর পরিবেশে। সরকারের বিভিন্ন বিভাগ নানা আয়োজনে দিবসটি পালন করবে। নানা কর্মসূচি পালন করা হবে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। এছারাও সরকারি দল আওয়ামী লীগ দেশব্যাপী নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
মন্তব্য লিখুন
আরও খবর
প্রাথমিকে ফের বৃত্তি পরীক্ষা চালুর কথা ভাবছে সরকার:...
প্রাথমিকে ফের বৃত্তি পরীক্ষা চালুর কথা...
তদন্তের পর দোষী সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
তদন্তের পর দোষী সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা:...
সন্ধ্যায় উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠক
সন্ধ্যায় উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠক
শাহজালালের থার্ড টার্মিনাল পরিদর্শন করলেন তিন উপদেষ্টা
শাহজালালের থার্ড টার্মিনাল পরিদর্শন করলেন তিন...
দিনের ভোট রাতে হওয়ার কোনো সুযোগ নেই আর:...
দিনের ভোট রাতে হওয়ার কোনো সুযোগ...
প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা
প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের...