
হেইয়ারে, হেইয়া আওয়াজ আর ভাদ্রের মেঘলা-রোদেলা সংমিশ্রণ হাওয়া। এই দুইয়ের সম্মিলনে তিতাস নদের বুকে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঐতিহ্যবাহী ‘নৌকাবাইচ’।
বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এই বাইচ অনুষ্ঠিত হয়। নৌকাবাইচে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জ জেলার নৌকা প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। প্রথম চারটি ধাপে ১৫টি নৌকা প্রতিযোগীতায় অংশ নেয়। প্রত্যেকটি ধাপ থেকে একটি করে বিজয়ীসহ চারটি নৌকা চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।
জাঁকজমকপূর্ণ এমন নৌকাবাইচ ঘিরে পুরো জেলা শহরই উৎসবের আমেজে মেতেছিল। বাইচ দেখতে তিতাস পাড়ে হাজির হয়েছিলেন অসংখ্য মানুষ। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছাড়াও হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর এলাকা থেকেও বিপুলসংখ্যক মানুষ তিতাসের দুই পাড়ে ভিড় জমান।
নৌকাবাইচ দেখতে ঢাকা থেকে আসা ফিরোজ জানান, তিতাস নদীতে নৌকা বাইচ হবে শুনে আগেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া চলে আসবো। দুপুর আড়াইটা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে আত্মীয়ের বাসায় থেকে ৬-৭ জনের একটি দল নিয়ে নৌকা বাইচ দেখতে এসেছি। খুব ভালো লেগেছে।
বাইচ দেখতে আসা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী তাইফ, সঞ্জয় ও মোসাদ্দেক’রা জানান, এর আগে টেলিভিশনে তারা এমন প্রতিযোগিতা দেখেছেন। তবে সরাসরি দেখে আরও বেশি উপভোগ করেছেন। মানুষের কোলাহল আর তিতাস পাড়ের লোকজনদের এমন আনন্দ দেখে নিজেও আনন্দিত হয়েছি। ইনশাল্লাহ আগামীতে নৌকা বাইচ দেখবো।
প্রতিযোগিতা শুরুর আগে নৌকা নিয়ে আসা মাল্লারা জানান, তাদের প্রতিটি নৌকাটি ৬২ হাত দীর্ঘ! আর প্রতিযোগিতার মাঠে এই নৌকায় মাল্লা থাকবেন ৭৫ জন! নৌকাগুলোর এক-একটির দাম ৮ লাখ টাকায় নৌকাটি কেনা হয়েছিল। এর আগের বছর তারা তিতাস নদীর নৌকা বাইচে অংশগ্রহণ করেছিলেন অনেকেই। ১৫ টির মধ্যে দু’একটি বাদে সবগুলোই নৌকা এই তিতাস নদীতে বাইচ দিয়েছে। বিজয়ীতো একজন হবে, তবে নৌকাই বাইচের মাধ্যমে তিতাস পাড়ের মানুষদের আনন্দ দেওয়াটাই মূল লক্ষ্য।
তবে দেড় কিলোমিটারের ওই বাইচে শেষ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা নবীনগর উপজেলার পক্ষে আব্দুল আলীর নৌকা বিজয়ী হয়। দ্বিতীয় হয় সরাইল উপজেলার নৌকা এবং তৃতীয় অবস্থানে ছিল আশুগঞ্জের নৌকা। তিনটি নৌকাই হবিগঞ্জ থেকে এসেছিল।
বিজয়ী হওয়ার পর আব্দুল আলীর নৌকাকে ট্রফিসহ নগদ ১ লাখ টাকা পুরস্কার তুলে দেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি।
এ সময় জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশ সুপার মো. শাখাওয়াত হোসেন, মেয়র নায়ার কবির, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আল মামুন সরকার।
মন্তব্য লিখুন
আরও খবর
কমলগঞ্জে ধলাই নদীর ভাঙন আতঙ্কে, রামপাশায় বাঁধ নির্মানের...
কমলগঞ্জে ধলাই নদীর ভাঙন আতঙ্কে, রামপাশায়...
কালিয়াকৈরে বোরো ধানের বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি
কালিয়াকৈরে বোরো ধানের বাম্পার ফলন, কৃষকের...
সংবর্ধনা পেলেন নবীনগর প্রেসক্লাবে সভাপতি মোঃ হোসেন শান্তি
সংবর্ধনা পেলেন নবীনগর প্রেসক্লাবে সভাপতি মোঃ...
আ.লীগ নিষিদ্ধে কমলগঞ্জে মধ্যরাতে জামায়াতের আনন্দ মিছিল, মিষ্টি...
আ.লীগ নিষিদ্ধে কমলগঞ্জে মধ্যরাতে জামায়াতের আনন্দ...
কমলগঞ্জে প্রতিবন্ধীদের মধ্যে জামায়েত ইসলামীর হুইল চেয়ার বিতরণ
কমলগঞ্জে প্রতিবন্ধীদের মধ্যে জামায়েত ইসলামীর হুইল...
কমলগঞ্জে জামায়াতে ইসলামীর অগ্রসরকর্মীদের নিয়ে শিক্ষাশিবির
কমলগঞ্জে জামায়াতে ইসলামীর অগ্রসরকর্মীদের নিয়ে শিক্ষাশিবির