আ.লীগের আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

১৫ আগস্ট বাঙালি জাতির একটি কলঙ্কময় অধ্যায়

প্রকাশিত: ৯:০৬ অপরাহ্ণ , ১৬ আগস্ট ২০২৩, বুধবার , পোষ্ট করা হয়েছে 1 year আগে
ছবি- সংগৃহিত

আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা আমাদের বাড়িতে সব সময় ওঠা-বসা, খাওয়া-দাওয়া করেছে, তারা বেইমানি করেছে। তারাই বেইমানি করেছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।

তিনি বলেন, জাতির পিতাকে হত্যা করে সংবিধানের নিয়মের বাহিরে গিয়ে খুনি মোশতাক নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে। রাষ্ট্রপতি ঘোষণার সাথে সাথে জিয়াউর রহমানকে সেনাপ্রধান হিসেবে ঘোষনা দেন। ১৫ আগস্ট ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জিয়াউর রহমান সরাসরি জড়িত ছিল।

বুধবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, মীর জাফর বেইমানি করে বেশি দিন ক্ষমতায় থাকতে পারেনি, দুই মাসের মাথায় তাকে চলে যেতে হয়েছিল। একই ঘটনা বাংলাদেশে ঘটেছিল ওই দিন। মোশতাককে বিদায় আর জিয়াউর রহমান নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দিয়ে ক্ষমতায় বসে। সংবিধান লঙ্ঘন করে একই সাথে সেনাপ্রধান ও রাষ্ট্রপতি , এতে কেরে সেনা আইন লঙ্ঘন করে।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাঙালির জাতীর সবচেয়ে বড় কলঙ্কময় অধ্যায়। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছিল এই ১৫ আগস্ট। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে হত্যা করা হয় বাঙালির জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। একই সঙ্গে আমার মা, আমার তিন ভাই, কামাল-জামালের বউদের নির্মমভাবে হত্যা করেছে বেইমানরা।

তিনি আরও বলেন, ইতিহাসের এ জঘন্য তম ঘটনা বাংলার মাটিতে ঘটে ছিল সে দিন। সেই কারবালার ঘটনাকেও ছারিয়ে গেছে। কারবালার ঘটনাও শিশু-নারীদের হত্যা করা হয়নি, কিন্তু ১৫ আগস্ট শিশু-নারীদেরও জঘন্য ভাবে হত্যা করে তারা ।

আমি আর আমার ছোট বোন রেহানা মাত্র ১৫ দিন আগে ৩০ জুলাই জার্মানির উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে ৩১ জুলাই আমরা সেখানে পৌঁছাই। আমরা কল্পনাতেও ভাবতে পারিনি আমাদের জীবনে এমন একটা আঘাত অপেক্ষা করছে। ১৩ তারিখে আব্বার সঙ্গে, মায়ের সঙ্গে ও পরিবারের সবার সঙ্গে কথা হয়। ১৫ তারিখে এ ঘটনা ঘটার পর যখন আমরা জানতে পারি, তখন সব তথ্য আমরা জানতে পারিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমার আপনজন হারিয়েছি, স্বজন হারিয়ে সে সময় বিদেশে রিফিউজি মত থাকতে হয়েছে। আমরা যারা আপনজন হারিয়েছি, আমারও তো হারিয়েছি, সবচেয়ে বড় প্রশ্ন সেদিন বাংলাদেশে কী হারিয়েছিল? বাংলাদেশের মানুষ কী হারিয়েছিল?

‘আমার বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারাটা জীবন উৎসর্গ করেছিলেন এদেশে মানুষের কল্যানের জন্য। তার জীবনের বেশির ভাগ সময় দেশের মানুষের কথাই ভেবেছেন। তিনিতো ভালোবেসেছিলেন এদেশে মানুষকে। এদেশের মানুষের ভাগ্য কি ভাবে পরিবর্তন করাযায়। তাদের সুখী জীবনের জন্য । অন্য, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসার ব্যবস্থা করে তাদের উন্নত জীবন দেওয়া লক্ষ্যে সব সময় কাজ করতেন। সেটাইতো তার জীবনের একমাত্র স্বপ্ন, সাধন, সংগ্রাম ছিল। কাজে তিনি নিজের জীবনকে দেশের জন্য উৎসর্গ করে গেছেন। বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে গড়ে তুলেছেন।

আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্যে রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, কার্যনির্বাহী সদস্য তারানা হালিম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির, উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি প্রমুখ।

আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ এবং উপ-প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল আউয়াল শামীম যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন।

মন্তব্য লিখুন

আরও খবর