বিতর্কিত ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ নামে নতুন আইন করতে যাচ্ছে সরকার। আর সেই আইনে ৬টি অজামিনযোগ্য এবং ১০টি জামিনযোগ্য ধারা থাকবে। তবে পুরোনো ডিজিটাল আইনে থাকা বেশিরভাগই থাকছে নতুন আইনটিতে।
সাইবার নিরাপত্তা আইন সম্পর্কে আইনমন্ত্রী এড. আনিসুল হক জানিয়েছেন, প্রস্তাবিত নতুন আইনে থাকছে কম সাজার পাশাপাশি অনেকগুলো অজামিনযোগ্য ধারাকে জামিনযোগ্য করা হয়েছে। তাছাড়া মানহানি মোকদ্দমার জেলদন্ড বিধান বাতিল করে শুধু জরিমানার করতে পারার বিধান রাখা হয়েছে। এতে কেউ যদি মানহানি মামলা করে তাহলে গ্রেফতার করা হবে না। অবশ্য নতুন আইন হলেও আগের সাত হাজার মামলার বিচার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনেই চলবে।
জাতিসংঘসহ দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংস্থা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের যেসকল ধারা বাদ দেওয়া বা সংশোধন দাবি করছে, সেগুলোর সাইবার নিরাপত্তা আইনে বহাল থাকছে। বিষয়টি আইনমন্ত্রী নিজেই নিশ্চিত করেছেন। ফলে বিভিন্ন মহল উদ্বেগ জানিয়ে বলেছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে যেভাবে ভিন্নমত দমন এবং অনলাইনে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করার হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে, সাইবার নিরাপত্তা আইন যেন সেরকম তথা দমনমূলক না হয়।
২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগ মুহুর্তে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি পাশ করা হয়েছিলো। এর আগে যেটি ছিলো তথ্য ও যোগযোগ প্রযুক্তি আইন। এবারও ঠিক তেমনটিই হচ্ছে। সাইবার নিরাপত্তা আইনটির আলোকে মনিটরিং টিম, ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম এবং প্রধানমন্ত্রীকে প্রধান করে ১১ সদস্যের ডিজিটাল নিরাপত্তা কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
বাংলাদেশ গণমাধ্যমগুলো আসন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে না সেটি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তবে সেটি নিয়ে এখন উদ্বেগ প্রকাশ করছে গণমাধ্যকর্মীরা। প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে সাইবার নিরাপত্তা আইন সঠিক তথ্য সংগ্রহ ও প্রকাশে হুমকি হয়ে দেখা দেবে কি না ?
এ অবস্থায় সরকারকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পরিবর্তে যে সাইবার নিরাপত্তা আইন করা হচ্ছে, তাতে আগের আইনের দমনমূলক বৈশিষ্ট্যগুলো ফিরিয়ে আনা হবে না। দেখা যাচ্ছে, সাইবার আইনে ডিএসএর মতো মোট ৬০টি ধারা থাকছে। এতে ৬টি ধারা অজামিনযোগ্যও রাখা হয়েছে। অর্থাৎ নাম পালটালেও এ আইনের কাঠামোগত পরিবর্তন হচ্ছে না।
নতুন আইনে বড় পরিবর্তন না আসায় সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের হয়রানি আদৌ থামবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। বিরোধী মত দমনে ও মুক্ত মতপ্রকাশ বাধাগ্রস্ত করতে ডিজিটাল আইন যেভাবে ব্যবহৃত হয়েছে, তাতে প্রয়োজনীয় সংস্কার না হলে নতুন আইন যে নামেই আসুক, হয়রানি কমবে না। আবার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ক্ষেত্রে অংশীজনের মতামত বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।
সেক্ষেত্রে নতুন আইন কার্যকরের আগে অংশীজনের মতামত ও উদ্বেগকে গুরুত্ব দেওয়া হবে কি না, এ প্রশ্ন থেকেই যায়। আমাদের প্রত্যাশা, সাইবার নিরাপত্তা আইন পাশ হওয়ার আগে অংশীজনসহ সংশ্লিষ্ট সবাই যেন প্রস্তাবিত এ আইন খুঁটিয়ে দেখার এবং তা নিয়ে মতামত দেওয়ার যথেষ্ট সুযোগ পান। অবশ্যই তাদের মতামতকে আমলে নিয়েই যেন আইনটি চূড়ান্ত করা হয়।
মন্তব্য লিখুন
আরও খবর
শেরপুরে দুটি ব্রীজের একটি অচল অপরটিতে ঝুঁকি নিয়েই...
শেরপুরে দুটি ব্রীজের একটি অচল অপরটিতে...
আজ শোকের দিন
আজ শোকের দিন
অনেক বেশি ভালবাসি, প্রিয় মা
অনেক বেশি ভালবাসি, প্রিয় মা
প্রবাসী সরকারের শপথবাক্য পাঠ
প্রবাসী সরকারের শপথবাক্য পাঠ
নৈঃশব্দ্য নববর্ষ
নৈঃশব্দ্য নববর্ষ
করোনায় সৃষ্ট ব্যাপক মহামারী পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে করণীয়...
করোনায় সৃষ্ট ব্যাপক মহামারী পরিস্থিতি থেকে...