
নিজস্ব প্রতিবেদক : কসবার চাঞ্চল্যকর সাইদুর হত্যা মামলার রহস্য উন্মোচন করে মো: রানা(২০) নামের এক খুনীকে আটক করেছে পুলিশ। কিছু টাকা ও দামী একটা মোবাইল ফোনের লোভে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার সিএনজি অটোরিকশা চালক সাইদুর রহমানকে (১৯) গলা কেটে হত্যা করেন রানা।
রোববার (১২ জানুয়ারি) কসবা উপজেলার শীতলপাড়া এলাকা থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। খুনী রানা উপজেলার কাঞ্চনমুড়ি এলাকার দানু মিয়ার ছেলে। সোমবার দুপুর ১২টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশ লাইন্সের ড্রিল শেডে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আনিসুর রহমান।
গত ২৯ ডিসেম্বর সাইদুর রহমান নিখোঁজ হওয়ার পর ২ জানুয়ারি কাঞ্চনমুড়ি এলাকার একটি বাথরুমের সেপটিক ট্যাংকের ভেতর থেকে তার গলা কাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় সাইদুরের মা হনুফা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে কসবা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এসপি আনিসুর রহমান জানান, রানা ও সাইদুর সম্পর্কে চাচা-ভাতিজা। দুইজনের বাড়িও একই এলাকায়। সমবয়সী হওয়ায় তাদের চলাফেরা একসঙ্গে। গত ২৯ ডিসেম্বর কসবা সীমান্ত কমপ্লেক্সের সামনে সাইদুরের সঙ্গে রানার দেখা হয়। তখন সাইদুর মানিব্যাগে থাকা বেশ কিছু টাকা ও একটি দামি মোবাইল ফোন দেখে রানার লোভ হয়। রানা তখন ফন্দি আঁটতে তাকে টাকা ও মোবাইল ফোন হাতিয়ে নেয়ার জন্য।
এসপি জানান, ফন্দির অংশ হিসেবে ‘রাতে এক লোক ইয়াবা নিয়ে আসবে, অটোরিকশায় করে সেই ইয়াবা পৌঁছে দিলে চার হাজার টাকা দিবে’ বলে সাইদুরকে প্রলোভন দেখায়। তখন সাইদুর বলেন অটোরিকশা লাগবে না, রাতে সে কাঞ্চনমুড়ি ড্রেজার মাঠ ধরে হেঁটে ইয়াবাগুলো পৌঁছে দিবে। কথা অনুযায়ী রাত সাড়ে ৭টায় ড্রেজারের মাঠে হাজির হয় সাইদুর। এরপর মাঠে দাঁড়িয়ে সাইদুর একই এলাকার দশম শ্রেণির এক ছাত্রী ও তার প্রেমিকার সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলতে থাকে। এ সময় রানা একটি বাঁশের খুঁটি দিয়ে পেছন থেকে সাইদুরের মাথায় আঘাত করলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এরপর সাইদুরকে ঝাপটে ধরে ও মাফলার দিয়ে গলায় পেচিয়ে ধরে রানা। পরে ক্ষুর দিয়ে সাইদুরকে গলা কেটে হত্যা করে তার মানিব্যাগ ও মোবাইল ফোন রেখে মাঠের পাশে সাইদুরের মরদেহ একটি বাথরুমের সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেয় রানা।
এসপি আরও জানান, সাইদুরকে হত্যার পর পর্যন্ত তার প্রেমিকা ফোনে কথা বলছিল। হত্যার পর রানা ফোনের সংযোগ কেটে দেয়। এরপর সেই ফোনে তার সিমকার্ড ঢুকিয়ে একটি নম্বরে ৩০ সেকেন্ড কথা বলে। প্রেমিকার কথা এবং সেই ৩০ সেকেন্ডের কথার সূত্র ধরে মোবাইল ফোন ও নম্বর ট্র্যাক করেই রানাকে শনাক্ত করা হয়। রানা ঘটনার পর কসবা থেকে পালিয়ে যায়। তাকে শনাক্ত করার পরও তাকে আমাদের সন্দেহ হয়নি মনে করানোর জন্য আমরা অন্য একজনকে গ্রেফতার করি। পরবর্তীতে সে নির্ভয়ে এলাকায় আসলে তাকে আমরা গ্রেফতার করি।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রেজাউল কবির, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর দফতর) আবু সাঈদ ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কসবা সার্কেল) আব্দুল করিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য লিখুন
আরও খবর
সরাইলে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা
সরাইলে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস উপলক্ষে আলোচনা...
কমলগঞ্জে চা বাগান থেকে গর্জন গাছ চুরি
কমলগঞ্জে চা বাগান থেকে গর্জন গাছ...
কমলগঞ্জে বাড়ির আঙ্গিনায় সবজি চাষের সময় গ্রেনেড উদ্ধার
কমলগঞ্জে বাড়ির আঙ্গিনায় সবজি চাষের সময়...
দুপুরে গণভবনে সংবাদ সম্মেলন করবেন প্রধান উপদেষ্টা
দুপুরে গণভবনে সংবাদ সম্মেলন করবেন প্রধান...
বেঁচে যাওয়া টাকা ফেরত পাবেন ৪৯৭৮ হাজি: ধর্ম...
বেঁচে যাওয়া টাকা ফেরত পাবেন ৪৯৭৮...
জরুরি অবস্থা ঘোষণায় মন্ত্রিসভার অনুমোদন লাগবে
জরুরি অবস্থা ঘোষণায় মন্ত্রিসভার অনুমোদন লাগবে