সফল স্বপ্নবাজ ব্যবসায়ী লোকমান খন্দকার

প্রকাশিত: ৮:৫২ অপরাহ্ণ , ১০ জানুয়ারি ২০২৪, বুধবার , পোষ্ট করা হয়েছে 1 year আগে
মো: লোকমান খন্দকার। ছবি- জহির রায়হান

জীবনের শুরু থেকেই কষ্ট করেছি, পাওয়া না পাওয়ার হিসেব করিনি। এখন পর্যন্ত যতটুকু পেয়েছি মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া। এমনই মন্তব্য করেছেন সফল স্বপ্নবাজ ব্যবসায়ী লোকমান খন্দকার।

চেষ্টা-সাধনার অপর নাম সফলতা। চেষ্টা-সাধনা ছাড়া সফলতা কল্পনা করা নিছক মূর্খতা। পৃথিবীর ইতিহাসে যাদের নাম সমাদৃত, মানুষের মুখে মুখে প্রশংসায় উচ্চারিত, স্বপ্নবাজদের হৃদয় টেবিলের আলোচনার প্রতিপাদ্য বিষয়, যারা উপমা হয়ে জ্বলছেন আলোর আকাশে, তারা সবাই চেষ্টা-সাধনায় ব্রত নিয়েছিলেন। স্বপ্ন নির্মাণে চেষ্টা-সাধনাকে চূড়ান্ত করে নিয়েছিলেন জীবনের জন্য। এজন্যই তারা সফলতার মুখ দেখতে পেরেছিলেন। তেমনই একজন সফল মানুষ মো: লোকমান খন্দকার।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের ছতুরা শরীফ গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম নোয়াব আলী খন্দকার ও মাতা জোসনা বেগম দম্পতির ঘর আলোকিত করে ১৯৭০ সালের ৫ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন লোকমান খন্দকার। চার ভাই ও দুই বোনের মধ্যে চতুর্থ তিনি। বাবা ছিলেন ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ল্যান্স নায়েক। আর মা ছিলেন গৃহিণী। ১৯৮০ সালে বাবার মৃত্যুর পর ৮ সদস্যদের পরিবার নিয়ে চালতে কষ্ট হতো বলে লোকমান খন্দকার বেশিদূর পড়ালেখা করতে পারেননি। এমনকি মেট্রিক পরিক্ষাও দিতে পারেননি তিনি।

জীবিকার তাগিদে ছোট বেলা থেকেই সংসারের হাল ধরতে হয়েছিল তাঁকে। এজন্য ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে কনস্টেবল হিসেবে যোগদান করেন তিনি। সামান্য বেতনে কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন পূরণ করতে পারবেন না জেনে তিন বছর চাকুরির পর ১৯৯১ সালে পুলিশের চাকুরী ছেড়ে দিয়ে চলে আসেন। এরপর ভাগ্যবদলের আশায় ১৯৯৬ সালে সূদুর মালয়শিয়ায় পাড়ি জমান। সেখানেও তেমন ভাল কিছু করতে পারেননি তিনি। অবশেষে পাঁচ বছর প্রবাসে কাটিয়ে ২০০১ সালে দেশে ফিরে আসেন তিনি।

নাছোরবান্দা, তবুও হাল ছাড়েননি। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে, জীবনযুদ্ধে টিকে থাকতে হলে হার মানা যাবে না। ফের ২০০৪ সালে তন্তর বাসস্ট্যান্ডে নাফি ভ্যারাইটিজ স্টোর নামে একটি দোকান খুলেন। তখন থেকেই কঠিন অধ্যবসায় আর চেষ্টার মাধ্যমে নিজেকে একজন সফল মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছেন।

বর্তমানে তন্তর বাসস্ট্যান্ডের খন্দকার মার্কেটে অবস্থিত ‘নাফি ভ্যারাইটিজ স্টোর’ নামের এই প্রতিষ্ঠানটি এখন এলাকায় বেশ জনপ্রিয়। সেইসাথে নিজেকে একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হিসেবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন। নিজের সুন্দর আচরণ, মানবিকতা ও সততায় মানুষকে মুগ্ধ করে গোটা এলাকার কাছে এখন ভালোবাসার লোকমান ভাই তিনি।

তার প্রচেষ্টায় গত বছর ২০২৩ সালে “ছতুরা-তন্তর-ভাটামাথা বাজার ব্যবসায়ী পরিচালনা কমিটি” প্রতিষ্ঠিত হয়। এই কমিটির মাধ্যমে সকল ব্যবসায়ীরা এখন এক ছায়াতলে আসতে পেরেছেন। ব্যবসায়ীরা ভালোবেসে লোকমান খন্দকারকে ওই কমিটিতে সভাপতির আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন। শুধু তাই নয় এলাকায় যেকোন মানবিক কাজেও তিনি সবসময় নিজেকে উৎসর্গ করেন।

লোকমান খন্দকারের ভাষ্য, নিজের উপার্জিত হালাল অর্থে পবিত্র কাবা শরিফ (আল্লাহর ঘর) ঘুরে দেখে আসার সুযোগ হয়েছে। এর চাইতে বড় প্রাপ্তি আর কিছুই হতে পারেনা। এখন বাকি দিনগুলো মানুষের ভালবাসা নিয়ে ঈমানের সহিত মৃত্যুবরন করতে পারলেই আলহামদুলিল্লাহ।