ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা

বাড়ির প্রবেশ মুখে ময়লা-আর্বজনার স্তূপ

প্রকাশিত: ৫:০১ অপরাহ্ণ , ১২ ডিসেম্বর ২০২৩, মঙ্গলবার , পোষ্ট করা হয়েছে 11 months আগে

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে এক নাগরিকের বাড়ির প্রবেশ মুখে আবাসিক ময়লা-আর্বজনার স্তূপ ফেলে রাখার অভিযোগ উঠেছে খোদ পৌরসভার কর্মকর্তা ও একজন কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই বাড়ির বাসিন্দারা। জেলা শহরের শিমরাইলকান্দি এলাকার মৃধা ভবনের সামনে মঙ্গলবার সকালে ময়লা-আবর্জনাগুলো ফেলা হয়।

নালা নির্মাণের জন্য জায়গা সংক্রান্ত জটিলতা নিয়ে আদালতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন করার ক্ষোভে পৌর কর্তৃপক্ষ এমনটি করেছে বলে জানান ভুক্তভোগী।
ওই বাড়ির বাসিন্দা আইনজীবী তারেকুল ইসলাম মৃধা, তার বাবা বাছির মৃধা, ভাইসহ চাচা মেরাজ মৃধা।

জানা গেছে, গত ২৭ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাে. আ. কুদদূস শিমরাইলকান্দির মেরাজ মৃধা ও ফারুকুল ইসলামকে বাড়ির সামনের সীমানায় থাকা দোকান, অফিস ও শৌচাগার অপসারণের জন্য চিঠি দেন।

চিঠিতে বলা হয়, শিমরাইলকান্দি প্রধান সড়কের পাশে নালার উপর একটি দোকান, একটি অফিস ও একটি শৌচাগার নির্মাণ করেছেন। নালাটি পুন:নির্মাণের জন্য উক্ত স্থাপনাগুলাে বাধা তৈরি করার ফলে জনরোষ তৈরি হচ্ছে। নির্মিত অবৈধ স্থাপনাগুলাে বর্তমান সরকারের ঘােষিত ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার পরিপস্থী বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়। সার্ভেয়ার মাকসুদুর রহমান কর্তৃক মৌখিকভাবে আপনাকে উক্ত স্থাপনাগুলাে অপসারণের জন্য বার বার তাগাদা দিলেও আপনি তা অপসারণ করেননি।১০ কার্য দিবসের মধ্যে স্থাপনাগুলো অপসারণের জন্য অনুরোধ করা হয়। অন্যথায় ১৯৭৬ এর ৫ (২) এবং স্থানীয় সরকার পৌরসভা আইন ২০০৯ এর চতুর্থ তফসিলের ৭ ধারা মােতাবেক প্রয়োেজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়।

স্থাপনা অপসারণে পৌরসভার এই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩০ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র সহকারী জজ (সদর) আদালতে মেরাজ মৃধার ভাই বাছির মৃধা বাদী হয়ে একটি মামলা করে বাড়ির সম্পূর্ণ জায়গায় অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন করেন। আদালত মামলটি গ্রহণ করে আপত্তি (উত্তর) দাখিল পর্যন্ত উভয়পক্ষকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। মামলায় পৌরসভার মেয়র, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাকিল মিয়া, পৌরসভার সার্ভেয়ার মাকসুদুর রহমানকে বিবাদী করা হয়।

ভুক্তভোগীর পরিবার ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, শিমরাইলকান্দিতে অবস্থিত বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) কার্যালয়ের সামনের সড়ক সংলগ্ন পূর্বদিকের বাড়িতে মেরাজ মৃধা ও তাঁর বড় ভাই বাছির মৃধা ১৭ দশমিক ১৩ শতক জায়গায় বসবাস করেন। বাড়ির সামনের উত্তর দিকে মেরাজ মৃধা এবং দক্ষিণ ও পূর্বদিকে বাছির মৃধা তাঁর স্ত্রী ও চার ছেলে নিয়ে বসবাস করেন। বাড়ির সামনের দিকে জায়গায় প্রধান ফটকের দক্ষিণ দিকে একটি দোকান ও বাছির মৃধার ছেলে আইনজীবী তারেকুল ইসলাম মৃধার ল’ চেম্বার রয়েছে। বাড়ির প্রধান ফটক, সামনের জায়গায় দোকান ও ল’ চেম্বারের সামনে পৌরসভার একটি নালা রয়েছে। পৌরসভার শিমরাইলকান্দির

সড়কের পূর্বদিকে নালা প্রশস্থকরণের কাজ শুরু করে পৌরসভা। নালা প্রশস্থকরণের জন্য মেরাজ মৃধা ও বাছির মৃধার বাড়ির সামনের অংশের জায়গা নিতে চাইছে পৌরসভা।
বাছির মৃধার ছেলে আইনজীবী তারেকুল ইসলাম মৃধা বলেন, নালা সম্প্রসারণের জন্য পৌরসভা আমাদের বাড়ির সামনের জায়গা নিতে চাইছে। পৌরসভা তাদের চিঠিতে বিএস জরিপে আমাদের নিজস্ব জায়গায় থাকা দোকান, শৌচাগার ও আমার ল’ চেম্বারকে অবৈধ স্থাপনা উল্লেখ করে অপসারণের জন্য বলেছেন। সরকারি দলিলমূলে আমাদের জায়গায় থাকা এসব অবৈধ হয় কিভাবে। তাছাড়া দোকান, শৌচাগার ও ল’ চেম্বার নালার উপরে অবস্থিত নয়। আদালতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন করায় পৌরসভার কমিশনার উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত হয়ে আমাদের বাড়ির প্রধান ফটকের সামনে পৌরসভার আবাসিক ময়লা-আর্বজনা ও বর্জ্য এনে ফেলেছেন। পৌরসভার এমন আচরণ খুবই হতাশাজনক। নিয়মিত কর আদায় করার পরও নাগরিক সেবার না পেয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছি। বাড়ির সামনে থেকে দ্রুত এসব আবর্জনা অপসারণের অনুরোধ করছি। পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে কমিশনার এমনটি করেছেন।
একাধিকবার চেষ্টা করেও মুঠোফোনের কল না ধরায় পৌরসভার কমিশনার শাকিল মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী কাউসার আহমেদ বলেন, বিষয়টি নিয়ে ভুক্তভোগীর পরিবার আমাকে অবগত করেছে। বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছি। দ্রুতই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাে. আ. কুদদূস বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আমরা ময়লা অপসারণের কাজ করি। পৌরসভার ময়লা আবর্জনা অপসারণ করাই আমাদের কাজ। এ বিষয়ে খোঁজ নিব।

মন্তব্য লিখুন

আরও খবর