পেশার সম্মান রক্ষিত দায়িত্বে, অন্যত্র নয়

প্রকাশিত: ২:৩৬ পূর্বাহ্ণ , ১০ এপ্রিল ২০২০, শুক্রবার , পোষ্ট করা হয়েছে 4 years আগে
ছবিতে বামে করোনা যুদ্ধের প্রথম শহীদ আরেকজন বিরামহীন যুদ্ধে এখনও...

মোঃ তাসলিম উদ্দিনঃ বাংলাদেশের সকল চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের ধন্যবাদ জানাই যারা জীবন বাজি রেখে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে অক্লান্ত পরিশ্রম ও সাহসের সাথে লড়াই করে যাচ্ছেন। আমি বিশ্বাস করি যে, চিকিৎসা একটি মহান পেশা, পৃথিবীতে এর চেয়ে মহৎ পেশা আর দ্বিতীয়টি নেই।

এই পেশায় যারা আত্মনিয়োগ করেন, তাদেরকে সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধার চোখে দেখে। এই শ্রদ্ধার জায়গাটুকু অক্ষুণ্ণ রাখতে সর্বদা সচেষ্ট থাকতে হবে চিকিৎসকদের। এ পেশার প্রতিটি ব্যক্তিকে হতে হবে অত্যন্ত সচেতন, দায়িত্ববান এবং মানবিক গুণসম্পন্ন। সেবার মনোভাব নিয়ে যারা এ পেশায় আত্মনিয়োগ করেছেন, তাদের অর্থ, প্রতিপত্তি ও মর্যাদার কোন কমতি হয় না। আসলে স্বচ্ছ মানসিকতা নিয়ে যারা যে পেশায়ই আত্মনিয়োগ করুক না কেন, তাদের প্রতি সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমত থাকে, মানুষের নেক নজর থাকে।

যদিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুনতে পাওয়া যাচ্ছে অনেক ডাক্তার তাদের চেম্বার বন্ধ রাখছেন? কিন্তু কেন? দেশের এই ক্লান্তিলগ্নে নিজ চেম্বার বন্ধ না করে পেশাদারীত্বের মনোভাব নিয়ে কর্মদক্ষতা দেখিয়ে যান, আপানাদের সফলতা কেউ কখনো রোধ করতে পারবে না।

অপরদিকে মহামারী নভেল করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় চায়নায় চিকিৎসা সেবা দেওয়া ডাক্তার-নার্সদের চেহারার অবস্থা তো সবাই দেখেছেন, এবার নিজের দেশের যোদ্ধাদের চেহারা দেখুন যারা সব কিছুর উর্দ্ধে।

ছবির মেয়েটি হলেন ‘গুলশানারা টগর’ পেশায় একজন ডাক্তার, যিনি কর্মক্ষেত্র (যুদ্ধক্ষেত্র) থেকে পলায়ন করেননি, বরং জীবন বাজী রেখে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। চলমান এই ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতিতে ফ্রন্টলাইন থেকে যুদ্ধ করে যাচ্ছেন নির্ভয়ে। এখন আছেন ঢাকা শিশু হসপিটাল এর করোনা ওয়ার্ডে।

আর সাদা পিপিই পরা এই ছেলেটা ছিল নারায়নগঞ্জ সদরের প্রশিক্ষনার্থী মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট। ওর নাম সেলিম আকন্দ। জীবন কেবল শুরু হয়েছিল তার। কি সরল, গর্বিত অভিব্যক্তি বাচ্চা ছেলেটার চোখেমুখে!

ডিউটি ছিল নারায়নগঞ্জ সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটে। নারায়নগঞ্জের প্রবাসীদের রাখা হয়েছিল যে আইসোলেশন ইউনিটে সেখানে। জেলা-উপজেলার সরকারি হাসপাতালে আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি এই মেডিকেল এসিস্ট্যানটরা। একেবারে যাকে বলে ডান হাত।

ছেলেটা মারা গেছে। আমাদের করোনা যুদ্ধের অগ্রসৈনিকদের ভেতর সে প্রথম শহীদ। পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ মৃত্যুটি তোমার ভাগ্যে জুটেছে।

অন্য প্রসঙ্গ না টেনে আজও চিকিৎসকদের ভালবাসি আমরা। আপনাদের বিশ্বাসে আমরা বিবেচনাহীন হয়ে আপনাদের দেয়া ঔষধ সেবন করে আসছি যুগের পর যুগ। আজ কেন ভুলে গিয়ে আপনারা চেম্বার বন্ধ করেছেন। এই যুদ্ধজয় করতে আপনাদেরই যে জাতীর বেশি প্রয়োজন। যেখানে প্রাশাসন ঠিকিই মৃত্যুর শেষ পর্যন্ত পাশে দাঁড়িয়ে আছে।

কোন যুদ্ধে জয়লাভ করতে যেমন প্রয়োজন আত্মত্যাগ, ঠিক করোনা ও তার ব্যতিক্রম কিছু নয়। করোনা যুদ্ধের প্রকৃত সৈনিক ডাক্তারদের পাশাপাশি আমরা জনসাধারণগনকেও এই কয়টাদিন নিজেকে ঘরে আবদ্ধ রেখে এই যুদ্ধে জয়লাভ করে নতুন জীবনরূপে দেশ ও জাতিকে রাঙ্গাতে হবে।

মন্তব্য লিখুন

আরও খবর