নওগাঁয় প্রাণ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিকে কুপিয়ে হত্যা

প্রকাশিত: ১০:৩৬ অপরাহ্ণ , ২০ নভেম্বর ২০২৩, সোমবার , পোষ্ট করা হয়েছে 12 months আগে

নওগাঁয় মামুনুর রশিদ ওরফে মামুন (৪২) নামে প্রাণ কোম্পানির এক বিক্রয় কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সোমবার (২০ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে জেলার সদর উপজেলার বক্তারপুর এলাকায় ওই কর্মীকে কুপিয়ে জখম করে দুর্বৃত্তরা। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

হত্যাকান্ডের শিকার মামুন সদর উপজেলার মাতাসাগর ফতেপুর গ্রামের আবুল কালামের ছেলে। তিনি নওগাঁ জেলায় প্রাণ আরএফএল কোম্পানির ডেলিভারি সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভ (ডিএসআর) পদে চাকুরি করতেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সোমবার বিকেলে নওগাঁ সদর ও বদলগাছী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পণ্য সরবরাহ করে ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা যোগে নওগাঁ শহরে কোম্পানির কার্যালয়ে ফিরছিলেন মামুন। পথিমধ্যে সদর উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের চাকলা এলাকায় পৌঁছালে দুর্বৃত্তরা পথরোধ করে তাঁর কাছে থাকা টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র দিয়ে মামুনকে এলোপাতাড়িভাবে কোপাতে থাকে দুর্বৃত্তরা। এক পর্যায়ে মামুনের চিৎকারে এলাকাবাসীরা এগিয়ে আসলে দুর্বৃত্তরা তাঁকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরে গুরুত্বর অবস্থায় সন্ধ্যা ৬টার দিকে স্থানীয়রা তাকে নওগাঁ জেনারেল ভর্তি করেন। সেখানে সাড়ে ৭টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মামুনের মৃত্যু হয়।

নিহত মামুনের বাবা আবুল কালাম বলেন, প্রতিদিন সকালে আমার ছেলে বাড়ি থেকে বের হয়ে জেলার বিভিন্ন জায়গার দোকানে পন্যগুলো পৌঁছে দিয়ে সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে। কিন্তু আজ আমার ছেলেটা লাশ হয়ে পড়ে আছে । তার কাছে ২০-৩০হাজারের মত টাকাও ছিল। টাকা না দেওয়ায় হয়তো তাকে মেরে টাকা ছিনতাই করে নিয়ে গেছে। সামন্য কিছু টাকার জন্য কেউ এমনটা কিভাবে করতে পারে। তাদের কি একটু মায়া হলোনা। যারা আমার ছেলেকে মেরে ফেলেছে তাদের কঠিণ শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

২৫০ শয্যা নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা: রাকিব হাসান বলেন, ছুরিকাঘাতে আহত ওই রোগীকে কিছু লোকজন সন্ধ্যা ৬টার দিকে হাসপাতালে এনে ভর্তি করিয়েছেন। তাঁর শরীরের দুই হাত, বুক ও পিঠে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থ্যায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়। প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে ফুঁসফুসে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ওই রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে মৃত্যুর সঠিক কারন উল্লেখ করা হবে।

নওগাঁ সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়সাল বিন আহসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পাওয়ার পরই নওগাঁ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি ঊর্ধ্বতন দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। হত্যাকারীদের শনাক্ত করতে তদন্ত চলছে। এ ঘটনায় নিহতের স্বজনরা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।