ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় যে ধ্বংসজ্ঞ চালানো হয়েছিলো এটি খুবই মর্মান্তিক। খুবই অসহায় ছিলো পুলিশ সদস্যরা। টি.আই মোরাদ সেদিনকার হামলা থেকে বেঁচে ফেরার বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছে। আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই এনআরবিসি ব্যাংক আখাউড়া শাখার ম্যানেজার আরিফুর রহমানসহ যারা পুলিশের এই দুঃসময়ে পাশে ছিলো।
শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার পর উত্তাল হয়ে উঠেছিলো পুরো বাংলাদেশ। জালাও-পোড়াও, ভাংচুর চলছিলো সর্বদিকে।
তেমনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঘটে গেছে এমনি ঘটনা।
গত ৫ আগষ্ট একদল দৃস্কৃতিকারী হামলা করে ব্রাহ্মনবাড়িয়া সদর থানায়। এসময় প্রাণ সঙ্কটে পড়েছিলো থানায় দায়িত্বরত পুলিশসহ কোয়াটারে থাকা পুলিশ সদস্যদের পরিবারদের।
তেমনি ঘটনার বর্ণণা দিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ট্রাফিক পরিদর্শক মুরাদ হোসেন।
মুরাদ হোসেন জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় সকাল ১০ টা থেকেই চলে আক্রমণ। কিছুটা থেকে গিয়ে আবারো ঘন্টা পাড় করে চালায় হামলা। তবে পুরোদমে হামলা শুরু হয় দুপুর ২ টা থেকে। একাধিকবার আক্রমণ না করার কথা মাইকে জানানো হচ্ছিলো। কিন্তু তখনও কোনো কাজ হয়নি। এসময় ট্রাফিক পুলিশের টি.আই সেলিম, টি.আই আমিনুর রহমান এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ওসি আসলাম হোসেন বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যরা থানায় উপস্থি ছিলো।
প্রথমে ঢিলা-ঢিলি করলেও এক পর্যায়ে পুরো থানা জুড়ে চালায় ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ। সেসময় সদর থানার পুলিশ কোয়াটারে ছিলো অফিসার মুরাদ হোসেনসহ ১০ পুলিশ সদস্যদের পরিবাবৃন্দ। জীবনসংশয়ে পড়ে ছিলো কোটারে অবস্থান নারী ও শিশুদের।
তখনই কোনো হাল খোঁজে না পেয়ে মুরাদ হোসেন মুঠোফোনে যোগাযোগ করেন তার বন্ধু এনআরবিসি ব্যাংক আখাউড়া শাখার ম্যানেজার আরিফুর রহমানকে। শোচনীয় অবস্থা সম্পর্কে জানান বন্ধুকে। বিপদের কথা জানতে পেরে বন্ধু আরিফ তার দুই বড় ভাই মাইদুল ইসলাম পাঠান ও শেখ তৌফিকুল ইসলাম তপুকে ফোন দেন এবং তাদের সাথে নিয়ে চলে আসেন থানার পিছনে। পাশের একটি বাড়ি থেকে বাঁশের মই, প্লায়ার্স ও হ্যাকস নিয়ে বাউন্ডারির ওয়ালে তারকাটা কেটে পুলিশ এবং থানার ভিতরে কোয়াটারে থাকা বীরত্বের সাথে নারী শিশুদের উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে পৌছে দেওয়া ব্যবস্থা করেন।
মুরাদ হোসেন আরো বলন, সেদিন মৃত্যুর দাড়প্রান্ত থেকে উদ্ধার করে তার পরিবারসহ আরো বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যের পরিবারকে নিরাপদ স্থানে পৌছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। আজ বেঁচে আছি বন্ধু আরিফুর রহমান জন্য
এনআরবিসি ব্যাংকার আরিফুল রহমান বলেন, বন্ধু বিপদের ছিলো। আর কিছু ভাবি নি। সেখানের আর কোনো ভাবনা আসে নি। মাইদুল ইসলাম পাঠান ও শেখ তৌফিকুল ইসলাম তপুকে নিয়ে হামলাকারীদের থেকে বাঁচাতে চলে যায় ধ্বংসযজ্ঞের সীমানায়। ভাবি নি বেঁচে ফিরবো কি না। শুধু বন্ধু মুরাদ নয়, সেখানে পুলিশ সদস্যদের আরো অনেক পরিবারের লোক ছিলো। মানুষ হিসেবে একজন মানুষ বাঁচানোর সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি। বন্ধুসহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যদের বাঁচাতে পেরে একটি মানবধর্ম পালন করে অনেক শান্তি পাচ্ছি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় যে ধ্বংসজ্ঞ চালানো হয়েছিলো এটি খুবই মর্মান্তিক। খুবই অসহায় ছিলো পুলিশ সদস্যরা।
টি.আই মোরাদ সেদিনকার হামলা থেকে বেঁচে ফেরার বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছে। আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই এনআরবিসি ব্যাংক আখাউড়া শাখার ম্যানেজার আরিফুর রহমানসহ যারা পুলিশের এই দুঃসময়ে পাশে ছিলো।
মন্তব্য লিখুন
আরও খবর
ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় অটোরিক্সার যাত্রী নিহত
ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় অটোরিক্সার যাত্রী নিহত
কমলগঞ্জে জাতীয় যুব দিবস পালিত
কমলগঞ্জে জাতীয় যুব দিবস পালিত
বেনাপোল-যশোর মহাসড়কে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বাস ভাড়া অর্ধেকে নির্ধারণ
বেনাপোল-যশোর মহাসড়কে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বাস ভাড়া...
পলিথিন নিষিদ্ধে জনসচেতনতায় তরী বাংলাদেশ’র লিফলেট বিতরণ
পলিথিন নিষিদ্ধে জনসচেতনতায় তরী বাংলাদেশ’র লিফলেট...
ঠাকুরগাঁওয়ে টাঙ্গন নদী’র জলকপাট খুলে দেওয়ায় চলছে মাছ...
ঠাকুরগাঁওয়ে টাঙ্গন নদী’র জলকপাট খুলে দেওয়ায়...
জয়পুরহাটে একই স্থানে পাল্টাপাল্টি সম্মেলনের ঘোষনা:প্রশাসন কর্তৃক ১৪৪...
জয়পুরহাটে একই স্থানে পাল্টাপাল্টি সম্মেলনের ঘোষনা:প্রশাসন...