ঠাকুরগাঁওয়ে টাঙ্গন নদী’র জলকপাট খুলে দেওয়ায় চলছে মাছ ধরা মহা উৎসব

প্রকাশিত: ৮:০১ অপরাহ্ণ , ১ নভেম্বর ২০২৪, শুক্রবার , পোষ্ট করা হয়েছে 3 hours আগে
ছবি- কালের বিবর্তন

ঠাকুরগাঁওয়ের রুহিয়া থানা’র রাজাগাঁও ইউনিয়নের চাপাতি নামক এলাকার ( স্লুইচগেট) জলকপাট টাঙ্গন নদীতে চলছে মাছ ধরা মহা উৎসব।

গত বুধবার রাতে রুহিয়া থানাধীন রাজাগাঁও ইউনিয়নের চাপাতি গ্রামের টাংগন নদী খুলে দেওয়ায় মাছ ধরতে নামে কয়েক ইউনিয়নের শত শত জেলেসহ সাধারণ মানুষ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাছ ধরার জন্য গ্রাম এবং শহরের শত শত মানুষ চাপাতি টাংগন নদীতে মাছ ধরতে আসেন। নারী, পুরুষ ও কিশোরসহ বৃদ্ধরাও রয়েছেন এ দলে।

সবাই জাল, পলো, খোচা, লাফিজাল, ফিকাজাল নিয়ে নেমে পড়েন মাছ ধরতে। এছাড়া যাদের মাছ ধরার সরঞ্জাম নেই তারাও হাত দিয়েমাছ ধরতে নেমে পড়েন কাদা পানির মধ্যে। সব মিলিয়ে এখানে এখন চলছে মাছ ধরার ধুম,চলবে রবিবার পর্যন্ত।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায, ১৯৮২ সালে শুকনো মৌসুমে এ এলাকার জমি চাষাবাদের জন্য ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ১৪নংরাজাগাঁও ইউনিয়নে ঠাকুরগাঁও পানি উন্নয়ন বোর্ড এই টাংগন নদী নির্মাণ করেন।

প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে পানি আটকে রাখার ফলে এই অঞ্চলের উঁচু জমি চাষ করার উপযুক্ত হয়। অপর দিকে আটকে রাখা পানিতে প্রতি বছর শীতের শুরুতেই সুইচগেটে’র,জলকপাট পানি ছাড়ে দেওয়ার পর মাছ ধরার জন্য উন্মুক্ত করে য়া হয়। এভাবেই প্রতিবছর চলে (সুইচগেট) টাংগন নদীতে মাছ ধরার উৎসব।

মাছ শিকারীরা ফিকা জাল, লাফি জাল, কারেন্ট জাল, চটকা জালসহ বিভিন্ন মাছ ধরার সরঞ্জাম নিয়ে আসেন মাছ শিকার করতে। পঞ্চগড় থেকে মাছ শিকারি বাবুল জানান, প্রতিবছর এইগেটে মাছ ধরার জন্য এ দিনটির অপেক্ষা করি।

যেদি কে চোখ যায় শুধু মানুষ আর মানুষ। ঠাকুরগাঁও থেকে আসা মাছ শিকারি সপ্ন জানান, সকালে মাছ ধরতে এসেছি সারাদিন মাছ ধরবো, এতে আমার অনেক ভালো লাগে। এখন পর্যন্ত ছোট-বড় সব মিলে ৫/৬ গুড়া কেজি মাছ পেয়েছি।

বুধবার ভোর থেকে শুরু হওয়া এ মাছ ধরা চলবে রবিবার পর্যন্ত। এদিকে শহরের চাইতে এখানে মাছের দাম অনেক বেশি বলে জানালেন মাছ ক্রেতা মাসুদ বিপ্লব।

দিনাজপুর থেকে মাছ ক্রয় করতে আসা শিহাব বলেন, এখানে টেংরা, টনা, মাছ প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর শোল ও রুই-কাতল মাছ চাওয়া হচ্ছে ৫ শ’ থেকে ৬শ’ টাকা। প্রতি কেজি পুঁটি মাছ ২০০-২৫০ টাকা।

স্থানীয় এক যুবক জানান, বর্ষাকালে পানি আটকে রাখার পর কার্তিক মাসের প্রথম দিকে এই গেট খুলে দেওয়া হয়। এতে উজানের পানি কমে যায়। আর শীতের শুরুতেই গেট উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় মাছ ধরার জন্য।

এভাবেই প্রতিবছর চলে (স্লুইজ গেটে) টাংগন নদীতে শত শত মানুষের মাছ ধরার উৎসব ও হাজার হাজার মানুষের মিলন মেলা।

মন্তব্য লিখুন

আরও খবর