ছাত্র-ছা’ত্রীদের করো’নার মধ্যে যে সুখবর দিল শিক্ষা বিভাগ

প্রকাশিত: ৯:৩৪ পূর্বাহ্ণ , ১৪ এপ্রিল ২০২০, মঙ্গলবার , পোষ্ট করা হয়েছে 4 years আগে

করো’না ভা’ই’রাসের কারণে অচ’ল হয়ে প’ড়েছে দেশের শিক্ষাকার্যক্রম। গত একমাস ধ’রে ব’ন্ধ রয়েছে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কবে সচল হবে তাও অনি’শ্চিত। এ অব’স্থায় চলতি শিক্ষাবছরের অর্ধেক সময় ন’ষ্ট হওয়ার আশ’ঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ কারণে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করে ক্লাস-পরীক্ষা কমিয়ে আনার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে বলে সংশ্লি’ষ্ট সূত্রে জা’না গেছে।

করো’না ভা’ই’রাসের প্রাদু’র্ভাবে বিশ্ব অচ’ল হয়ে প’ড়েছে। এ পর্যন্ত বিশ্বে লক্ষাধিক মানুষ এই ভা’ই’রাসে আক্রা’ন্ত হয়ে প্রা’ণ হারিয়েছেন। আরও প্রায় ১৬ লাখের অধিক মানুষ এ ভা’ই’রাসে আক্রা’ন্ত হয়ে হাসপাতা’লে চিকি’ৎসাধীন রয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকে জীবন-ম’রণের স’ঙ্গে পাঞ্জা ল’ড়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশেও ম’হামা’রি আ’কার ধারণ করছে। করো’না য় আক্রা’ন্ত হয়ে এ পর্যন্ত দেশে ২৭ জনের মৃ’ত্যু হয়েছে, আক্রা’ন্ত হয়েছেন ৪২৪ জন। এমন প’রিস্থিতিতে কয়েক দ’ফায় আগামী ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত সারাদেশে সাধারণ ছুটি ঘো’ষণা করা হয়েছে। এ সময় পর্যন্ত দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ব’ন্ধ থাকবে।

জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহ বলেন, করো’না প’রিস্থিতির কারণে টানা একমাস ব’ন্ধ থাকায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা বা’তিল করা হয়েছে। এ পরীক্ষা আগামী ১৫ থেকে ২৪ এপ্রিল হওয়ার কথা ছিল। ক্ষ’তি পুষিয়ে নিতে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের জন্য আম’রা টেলিভিশনে পাঠদান কার্যক্রম শুরু করেছি। যারা টেলিভিশনে ক্লাস ক’রতে পারছে না তারা ওয়েবপোর্টালের মাধ্যমে সেসব ক্লাস ক’রতে পারছে। আমাদের কিছু প্রতিকূলতা থাকার পরও কিছু শিক্ষার্থী এসব সুবিধা থেকে ব’ঞ্চিত থাকছে। তাদের কথা চিন্তা করে বিদ্যালয় খুললে সেসব ক্লাস সংক্ষিপ্ত আ’কারে শিক্ষকরা রিভিশন দেবে।

তিনি বলেন, আম’রা আশা করছি আগামী ২৫ এপ্রিলের পর প’রিস্থিতি স্বা’ভাবিক হয়ে যাবে। এ সময়ের মধ্যে প’রিস্থিতি অনুকূলে আ’সলে ব’ন্ধের দিনগুলোতে পরীক্ষা-ক্লাস নিয়ে সমন্বয় করা হবে। আর যদি তা না হয় তবে সিলেবাস সংক্ষিপ্ত ক’রতে হবে। ক্লাস-পরীক্ষা কমিয়ে ২০২০ শিক্ষাবর্ষ শেষ করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।

জা’না গেছে, গত একমাস ধ’রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ব’ন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের চলতি বছরের সিলেবাস অনুযায়ী ক্লাস-পরীক্ষা আয়োজন করা অসম্ভব হয়ে প’ড়েছে। কবে প’রিস্থিতি স্বা’ভাবিক হয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব হবে তা অনি’শ্চিত অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে সংসদ টেলিভিশনে পাঠদান সম্প্র’চার শুরু করা হলেও নানা প্রতিকূলতার কারণে অনেকে সেসব ক্লাস থেকে ব’ঞ্চিত হচ্ছে। আবার কারিগরি, মাদরাসা শিক্ষার্থীদের এর আওতায় আনা হয়নি। এ কারণে টেলিভিশন পাঠদান নিয়ে এক ধ’রনের বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে।

অন্যদিকে এমন প’রিস্থিতি স্বা’ভাবিক হতে শিক্ষার্থীরা ছয় মাস পিছিয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন শিক্ষাবিদরা। এটি পুষিয়ে নিতে সিলেবাসের ক্লাস-পরীক্ষা কমিয়ে শিক্ষাবর্ষ শেষ ক’রতে একটি নতুন প’রিকল্পনা করার প’রাম’র্শ দেয়া হয়েছে।

সিলেবাস পরিবর্তনের বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক মো. গো’লাম ফারুক চৌধুরী শনিবার জাগো নিউজকে বলেন, সাধারণ ছুটির মধ্যে প’রিস্থিতি স্বা’ভাবিক হলে ক্ষ’তি পুষিয়ে নিতে সিলেবাস পরিবর্তনের প্রয়োজন হবে না। তবে এটি আরও দীর্ঘায়িত হলে সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করা হতে পারে। সেই ক্ষেত্রে কিছু ক্লাস-পরীক্ষা কমিয়ে আনা হতে পারে।

চলমান প’রিস্থিতিতে করণীয় বিষয়ে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক শিক্ষাবিদ সৈয়দ মঞ্জুরুল ইস’লাম শনিবার জাগো নিউজকে বলেন, করো’না প’রিস্থিতি বিশ্বের কারও নি’য়ন্ত্রণে নয়, এটার জন্য কেউ প্র’স্তুত ছিল না। এ কারণে বিশ্ব অচ’ল হয়ে প’ড়েছে। সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ব’ন্ধ করে দেয়া হয়েছে। পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে নিতে আমাদের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে টেলিভিশনে ক্লাস কার্যক্রম শুরু করলেও তাতে ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী সুবিধা পাচ্ছে, আর ৬০ শতাংশ ব’ঞ্চিত হচ্ছে। তাই এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সিলেবাস শেষ করা অসম্ভব।

তিনি বলেন, করো’না ভা’ই’রাসের প’রিস্থিতি স্বা’ভাবিক হতে জুন-জুলাই মাস লে’গে যেতে পারে। এর ফলে চলতি শিক্ষাবর্ষের ছয় মাস ন’ষ্ট হয়ে যাবে। শিক্ষার্থীদের সেশনজটে না ফেলতে নতুন করে একটি ক’র্মপ’রিকল্পনা তৈরি ক’রতে হবে। শিক্ষকদের প্রণোদনা দিয়ে ব’ন্ধের দিনগুলোতে ক্লাস-পরীক্ষা নিয়ে সিলেবাস শেষ ক’রতে হবে। এ ক্ষেত্রে ক্লাস-পরীক্ষা কমিয়ে আনা যেতে পারে।

১৯৭১ সালে এক বছর দেশের শিক্ষাকার্যক্রম ব’ন্ধ ছিল, তা পুষিয়ে নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে এই শিক্ষাবিদ বলেন, আগে থেকেই ক’র্মপ’রিকল্পনা তৈরি করা না হলে সংক’ট কা’টিয়ে গেলেও শিক্ষাব্যব’স্থায় নতুন সংক’ট সৃষ্টি হবে। শিক্ষা ও স্বা’স্থ্যখাতে আরও বেশি বাজেট বরাদ্দ দিতে হবে। শিক্ষা ও সংস্কৃতির মাধ্যমে মানুষকে সচে’তন করে তুলতে হবে।

মঞ্জুরুল ইস’লাম আরও বলেন, ব’ন্ধের সময়গুলোতে হাউজ টিউটরদের ওপর নির্ভর না করে অ’ভিভাবকদের তাদের সন্তানকে পড়াতে হবে। স্কুল-কলেজ ব’ন্ধ থাকলে বাসায় বসে অলস সময় পার করলে তারা নিজে’রাই ক্ষ’তিগ্রস্ত হবে। এ কারণে অ’ভিভাবকদের দায়িত্ব নিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা করাতে হবে। আর যাদের পড়ানো সম্ভব হবে না তাদের সন্তানকে নিয়মিত পড়ালেখা ক’রতে চা’প দিতে প’রাম’র্শ দিয়েছেন এই শিক্ষাবিদ।