• ছবিঘর ফিচার
  • কালবৈশাখী ঝড়ে কমলগঞ্জে বাড়িঘর বিধ্বস্ত, ফসলের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা লণ্ডভণ্ড

কালবৈশাখী ঝড়ে কমলগঞ্জে বাড়িঘর বিধ্বস্ত, ফসলের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা লণ্ডভণ্ড

প্রকাশিত: ৭:২৮ অপরাহ্ণ , ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , পোষ্ট করা হয়েছে 4 weeks আগে
ছবি- কালের বিবর্তন

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার উপর বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড়ে উপজেলার আদমপুর, কমলগঞ্জ সদর, পতনউষার ও মাধবপুর ইউনিয়নের কয়েকশ ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। উপড়ে পড়েছে হাজারো গাছপালা। ১১ কেভির প্রায় ৪টি খুঁটি ভেঙ্গে ১০০স্থানে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ১২টায় প্রচন্ড কালবৈশাখী ঝড়ের সাথে বজ্রপাতের শব্দে এলাকাবাসী আতংকিত হয়ে পড়ে।

রাতে ১২টা দিকে ঝড়ে কমলগঞ্জ-আদমপুর সড়কে গাছ পড়ে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। ভোর সাড়ে ৫টার দিকে যোগাযোগ চালু হয়। বিদ্যুৎ লাইন লণ্ডভণ্ড হয়ে যাওয়ার কারণে রাত থেকে এখনো পর্যন্ত ৪টি ইউনিয়নের কয়েকে হাজার মানুষ এখনো অন্ধকারে নিমজ্জিতে আছে। কালবৈশাখী ঝড়, ভারী বর্ষন ও শিলাবৃষ্টিতে সম্পূর্ণ ও আংশিক শতাধিক বাড়িঘর বিধ্বস্ত, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা লণ্ডভণ্ড, চা বাগানে কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত, ১০-১২ হেক্টর জমির বোরো ফসল ও সবজি ক্ষেত বিনষ্ট হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত এ উপজেলার আদমপুর, কমলগঞ্জ সদর,পতনঊষার ও মাধবপুর ইউনিয়নের তিলকপুর, জামিরকোনা, রানীবাজার ও ভাসানিগাঁও সহ ৪টা গ্রামের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এ চিত্র পাওয়া যায়।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর, কমলগঞ্জ সদর, পতনঊষার ও মাধবপুর ইউনিয়নের তিলকপুর, জামিরকোনা, রানীবাজার ও ভাসানিগাঁও সহ প্রায় ৪টি গ্রামে ব্যাপক বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রাস্তার পাশে থাকা গাছপালা উপড়ে পড়ে। বিভিন্ন এলাকায় পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙ্গে পড়েছে।

এছাড়াও জামিরকোনা গ্রামের জমির মিয়া, শাহজাহান, মাহমুদ আলী, হবিব, ময়না বেগম, খলিল মিয়া, বশির মিয়া, আয়ুব, আলফা, শফিক, জলিল, করিম, মিলাদ, সিরাজুল ইসলামের ঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়।

কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের জামিরকোনা গ্রামের কৃষক কাশেম মিয়া জানান, ‘আমার ৪ কিয়ার (১২০শতক) জায়গায় টমেটো, লাউ,সিম, রামাই, জিঙ্গা ও করলা চাষ করেছিলাম। কিন্তু রাতে ঝড় ও ভারী বর্ষণে কারনে আমার সব শেষ হয়ে গেছে। প্রায় আড়াই লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।’

এদিকে ঘর ভেঙে যাওয়া জমির মিয়া জানান, ‘রাতে বৌ বাচ্চা নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ ১২টার দিকে ঝড় তুফান আসে। মুহুর্তে আমার ঘরটি মুরচা মেরে ভেঙে উপড়ে পড়ে যায়। আমি পরিবারের সবাইকে নিয়ে বাহিরে চলে আসি। আমাদের কারো ক্ষতি হয়নি। কিন্তু এখন থাকবো কোথায়। আমি প্রশাসনের কাছে সহযোগিতা চাইছি’

ক্ষতিগ্রস্ত কমলগঞ্জ সদর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান জানান, ‘কালবৈশাখী ঝড় ও ভারী বর্ষণে কারনে আমার ইউনিয়নের ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট সহ ফসলেরও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমি এসব বিষয় স্থানীয় প্রশাসনকে অবগত করেছি।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার রায় বলেন, ‘আমরা সকাল থেকে অফিসের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সড়জমিনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান দেখার জন্য বের হয়েছে। কৃষকদের প্রায় ১০-১২ হেক্টর কৃষি জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। সেসব কৃষকদের নামগুলো তালিকা করছি। তাদের সহযোগিতা করা হবে।’

মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কমলগঞ্জ জোনাল অফিসের ডিজিএম গোলাম ফারুক মীর জানান, ‘ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। প্রায় ৪টি খুঁটি ও ১ শতাধিক স্থানে তার ছিঁড়ে গেছে। এসব জায়গায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করতে সময় লাগবে।’

কমলগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আছাদুজ্জামান বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ির তালিকা দেয়ার জন্য ইউপি চেয়ারম্যানদের বলা হয়েছে।’

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন জানান, আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের খুঁজ খবর নিয়েছি। স্থানীয় চেয়ারম্যানদের সোথে কথা হয়েছে। তাদের বলেছি তালিকা করে দিতে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের সহযোগিতা করা হবে।’

মন্তব্য লিখুন