কমলগঞ্জে নিখোঁজের একদিন পর যুবকের খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশিত: ৬:৩০ অপরাহ্ণ , ২৭ এপ্রিল ২০২৫, রবিবার , পোষ্ট করা হয়েছে 2 weeks আগে
ছবি- কালের বিবর্তন

আব্দুর রাজ্জাক কমলগঞ্জ(মৌলভীবাজার) : মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে নিখোঁজ হওয়ার একদিন পর ইকবাল মিয়া (৩০) নামে এক ব্যক্তির খণ্ডিত মরদেহ রেললাইন পাশ থেকে উদ্ধার করেছে রেলওয়ে পুলিশ। তবে নিহতের পরিবারের দাবী শ্বশুর বাড়ীর লোকজন পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে লাশ রেল লাইনের ওপর ফেলে রেখে দিয়েছে। ইকাবালে মূত্যু নিয়ে ধুম্ররজালে সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। ঘটনার পর কমলগঞ্জ থানা পুলিশ ,শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে(জিআরপি)পুলিশ ও পিবিআই পুলিশ রহস্য উদঘাটনে তদন্ত শুরু করেছে।

জানা যায়,উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়ের বড়চেগ গ্রামের ইলিয়াছের ছেলে ইকবাল মিয়া(৩০)এর সাথে একই উপজেলার সদর ইউনিয়নের ভেড়াছড়ি গ্রামের জনাব আলীর মেয়ে রিমা বেগম (২৫) এর সাথে ৬ মাস পূর্বে সামাজিক ভাবে বিবাহ হয়। ২৫ এপ্রিল শুক্রবার ইকবাল স্ত্রীকে নিয়ে শশুড়বাড়ী ভেড়াছড়ি বেড়াতে যায়। ২৬ এপ্রিল শনিবার বিকেল স্ত্রীকে শশুড় বাড়ীতে রেখে একাই ইকবাল হোসেন তার বাড়ীতে ফেরার জন্য বেড়িয়ে আসে।

রাতে ইকবাল বাড়ীতে না ফেরায় এবং তার মোবাইল ফোনের সুইছ বন্ধ পাওয়া যায়। ফলে নিহতের পরিবার ও শশুড়বাড়ী লোকজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজা খোঁজি করে তার সন্ধান না পাওয়ায় নিহতের বাবা রাত ১০ টায় কমলগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়রি দায়ের করেন।

এদিকে রোববার (২৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮টায় কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের অদূরে রেলগেইটের পাশের্^ খণ্ডিত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে লোকজানাজানি হয়ে ও শ্রীমঙ্গল রেল পুলিশে খবর দেয়। ওপরদিকে ইকাবালের পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে লাশটি দেখে ইকাবালের লাশ হিসাবে সনাক্ত করে।

পরে ঘটনাস্থল থেকে শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে পুলিশের উপ-পরিদর্শক দীপক সরকারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল নিহতের বিচ্ছিন্ন হাত-পা অদুরে ধানি জমি থেকে ও রেল রাইনের পাশ থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।

নিহত ইকবালের ভাই আরমান আহমেদ বলেন, আমার ভাইকে এখানে বিয়ে করানো পর থেকেই পরিবারে অশান্তি ছিলো। আমার ভাইয়ের স্ত্রী কিংবা তার শশুড় বাড়ীর লোকজন ষড়যন্ত্র করে আমার ভাইকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করিয়েছে।

স্ত্রী রিমার বাবা জনাব আলী বলেন, আমার মেয়ে ও মেয়ে জামাইয়ের মধ্যে কোন ঝগড়া-ঝাটি ছিলো না। তারা সুখেই ছিলো। আমার মেয়ের গর্ভে সন্তান এসেছে। জামাই শুক্রবার আসবে বলে ঘর থেকে বেরিয়ে গেছে,আজ লাশ ফেলাম।

এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাখন চন্দ্র সূত্রধর রোববার সকালে সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

এদিকে কমলগঞ্জ থানা পুলিশ,শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে(জিআরপি)পুলিশ ও পিবিআই পুলিশ পৃথক পৃথক ভাবে ঘটনাস্থ পরিদর্শন সহ ঘটনাটি তদন্ত করছে।

কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ ইফতেখার হোসেন বলেন, শনিবার রাতে নিহত ইকবালের বাবা থানায় এসে ছেলে নিখোঁজ এর কথা বলে জিডি করে গেছেন। এখনো পর্যন্ত কেউ অভিযোগ দায়ের করেনি।

শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুদ হাওলাদার বলেন, আমরা রেললাইন থেকে লাশ উদ্ধার করেছি। মৃতদেহ থেকে পা সহ পুরো শরীর ছিন্নভিন্ন অবস্থায় পাওয়া গেছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এটি পরিকল্পিত হত্যা নাকি আত্মহত্যা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও তদন্তের পর জানা যাবে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।