আইন অনেক শক্তিশালী রাষ্ট্র হত্যাকারীর নিরাপদ আশ্রয়স্থল হতে পারে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

কানাডা আত্মস্বীকৃত খুনি ও হত্যাকারীদের আশ্রয়দাতা দেশে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

তিনি বলেন, ‘কানাডার এমন ব্যবস্থায় হত্যাকারীও সেখানে গিয়ে আশ্রয় নিয়ে থাকে। কানাডা হত্যাকারীদের নিরাপদ আশ্রয়দাতা হয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি নুর চৌধুরীও সেখানে আশ্রয় পেয়েছে। কানাডার ও আমেরিকা আইন অনেক শক্তিশালী রাষ্ট্র , তাই তারা হত্যাকারীর নিরাপদ আশ্রয়স্থল হতে পারে না।’

সোমবার (১৪ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহদাতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাংবাদিক ফোরাম’ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।

সভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফেরানো নিয়ে আমাদের কাছে প্রায়ই জানতে চাওয়া হয়। আমি যতটুকু জানি- ১৫ আগস্টের যে ঘাতকদের মধ্যে পাঁচজনকে এনে বিচারের সম্মুখীন করে ফাঁসি দেওয়া হয়। ২০২০ সালের দিকে আরেকজনকে বিচারের মাধ্যমে ফাঁসি দেওয় হয়। বাকি সাতজনের মধ্যে পাঁচজনের এখনোও পর্যন্ত সন্ধান পাওয়া যায়নি। বাকি দুজন হলো- রাশেদ চৌধুরী ও নুর চৌধুরী। রাশেদ আছে আমেরিকায়, নুর কানাডায়

রাশেদ-নুরকে ফেরানোর জন্য দুই দেশে অনেক চিঠিপত্র লেখা হয়েছে জানিয়ে ড. মোমেন বলেন, ‘এমনকি খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দিয়েও আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে আমরা চিঠি দেওয়া হয়েছে। তারা সবসময় বলেন, এ ইস্যুটা তাদের অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে আছে। অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস আমাদের দুবছর আগে অর্থাৎ ট্রাম্প প্রশাসনের সময় উনি (মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল) চাইলেন যে, বঙ্গবন্ধু হত্যার যে মামলা হয়েছিল, সেই মামলার বিস্তারিত তথ্য চেয়েছিলেন। আমরা মামলার সব তথ্য তাদের দিয়েছি। এরপর আমরা এ বিষয়ে যতবার জানতে চেয়েছি, তারা বলেন, এটা অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে আছে। এ বিষয়ে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি এখনো।’

তিনি বলেন, কানাডায় থাকা বঙ্গবন্ধুর খুনি নুর চৌধুরীর অবস্থানও কানাডা সরকার বলতে চায় না। এজন্য আমরা কানাডার আদালতে মামলাও করেছি। বিচারক রায় দিয়েছেন যে, তার (নুর) অবস্থান জানাতে কানাডার সরকারের কোনো আপত্তি থাকা উচিত নয়। তার পরও কানাডা সরকার বঙ্গবন্ধুর খুনি নুর চৌধুরীর কোনো তথ্য আমাদের দেয় না।’

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী।

সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, সাবেক সভাপতি ও দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম প্রমুখ।