এনএসসিতে ৩৬ ফেডারেশনের অর্থ স্থগিত

প্রকাশিত: ৫:৪৭ অপরাহ্ণ , ২৯ অক্টোবর ২০২৪, মঙ্গলবার , পোষ্ট করা হয়েছে 3 days আগে

দেশের সকল ফেডারেশনের অভিভাবক সংস্থা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। তদারকির অধিকার থাকা সত্ত্বেও এনএসসি বিগত সময়ে ছিল উদাসীন। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে ফেডারেশনে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় অভিভাবক সংস্থাটি বিশেষভাবে কাজ করছে। নির্ধারিত সময়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে অডিট রিপোর্ট জমা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় অর্থ ছাড়করণ সাময়িক স্থগিত করেছে ৩২ ফেডারশেন/এসোসিয়েশনের। যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার অনুমোদনেই এই সংক্রান্ত চিঠি জারি করেছে এনএসসি।

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন ২০১৮ সালের ২৩ নম্বর ধারায় প্রতিটি ফেডারেশনের আয়-ব্যয় হিসাব বিবরণী ও অডিট প্রতিবেদন পরবর্তী বছরের সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে দাখিল করার নির্দেশনা রয়েছে। এ রকম বিধান থাকলেও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বিগত সময় ফেডারেশনগুলোকে এ নিয়ে তাগিদ দেয়নি। এবার এই বিষয়ে চিঠি প্রেরণ করেছিল এনএসসি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এবং কিছুদিন পর মিলিয়ে ২৩ ফেডারেশন অডিট রিপোর্ট জমা দিয়েছে। বাকি ৩২ ফেডারেশন/এসোসিয়েশন অডিট রিপোর্ট জমা দেয়নি এনএসসিতে।

ক্রিকেট বোর্ড ছাড়া দেশের বাকি সকল ফেডারেশন/এসোসিয়েশন আর্থিক অনুদান প্রদান করে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। বছরে চার কিস্তিতে এই অর্থ ছাড় হয়। এক কিস্তি নেওয়ার পর আরেক কিস্তি নেওয়ার সময় আগের কিস্তির হিসাব এবং হিসাবে বিপরীতে ভ্যাট/ট্যাক্স প্রদান করে ফেডারেশন। ফেডারেশনগুলো জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে আর্থিক হিসাব দিলেও তাদের বাৎসরিক আয়-ব্যয় ও অডিট রিপোর্ট এনএসসিতে জমা দেয় না। অনেক ফেডারেশন/এসোসিয়েশনের আর্থিক ভিত্তি খুবই দুর্বল। কোম্পানি দিয়ে অডিট করানোর সামর্থ্যও নেই। আবার অনেক ফেডারেশনের সামর্থ্য থাকলেও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় যায় না। অডিট রিপোর্ট জমা না দেওয়া শীর্ষ ফেডারেশনের মধ্যে রয়েছে হকি, দাবা, কাবাডি, শ্যুটিং, অ্যাথলেটিক্স ও জিমন্যাস্টিক্স।

৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে সকল ফেডারশেন সভাপতির সক্রিয়তা-নিষ্ক্রিয়তা জানতে চেয়ে চিঠি দিয়েছিল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। অভিভাবক সংস্থার সেই চিঠির জবাব দেয়নি ১৭ ফেডারেশন। আইন অনুযায়ী ক্রীড়া পরিষদের নির্দেশনা পালন করা ক্রীড়া ফেডারেশনগুলোর অন্যতম দায়িত্ব। সেই দায়িত্ব পালন না করায় ওই ১৭ ফেডারেশনের অর্থও আপাতত স্থগিতের মধ্যে পড়েছে। অডিট রিপোর্ট জমা না দেওয়া ১২ ফেডারেশন রয়েছে এই তালিকাতেও। অডিট রিপোর্ট জমা দিয়েও ভলিবল, সাঁতার, ভারত্তোলন ও বিলিয়ার্ড ফেডারেশন সভাপতি সংক্রান্ত চিঠির উত্তর না দেওয়ায় অর্থ স্থগিতকরণের তালিকায় পড়েছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও সভাপতি সংক্রান্ত চিঠির উত্তর দেয়নি। ক্রিকেট বোর্ড অবশ্য জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অর্থ গ্রহণ করে না এক যুগেরও বেশি সময়।

অর্থ স্থগিত হওয়া ফেডারেশন/এসোসিয়েশন

অডিট রিপোর্ট না দেওয়া ফেডারেশন/এসোসিয়েশন— সাইক্লিং, উশু, দাবা, কাবাডি, কারাতে, স্কোয়াশ, শ্যুটিং, অ্যাথলেটিক্স, গলফ, জিমন্যাস্টিক্স, রোইং, শরীর গঠন, ব্রিজ, বেসবল-সফটবল, সেপাক টাকরো, বাশাআপ, প্যারা আরচ্যারি, মাউন্টেরিং, থ্রো বল, কান্ট্রি গেমস, মার্শাল আর্ট, ঘুড়ি, কিকবক্সিং, আন্তর্জাতিক তায়কোয়ান্দো, ব্যুথান, সার্ফিং, ইয়োগা, চুকবল, জুজুৎসু, খিউকুশিন, হকি ও টেনিস।

সভাপতির তথ্য প্রদান না করা ফেডারেশন— ক্রিকেট (ক্রিকেট বোর্ড জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অনুদান গ্রহণ করে না), ভলিবল, সাঁতার, ভারত্তোলন, বিলিয়ার্ড।

মন্তব্য লিখুন

আরও খবর